আপনি কী ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলতে চান? কীভাবে খুলবেন কী কী লাগবে জানা নেই? তাহলে চলুন জেনে নিই কীভাবে কস্পিউটার এবং মোবাইল-ফোন ব্যবহার করে একটি প্রফেশনাল ইউটিউব চেনেল বা একাউন্ট খুলবেন।
এই আর্টিকেলে কীভাবে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলবেন ও ভেরিফাই এবং কীভাবে মনিটাইজেশন চালু করবেন এটি বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
কম্পিউটার বা মোবাইল ডিভাইস এবং একটি ইন্টারনেট সংযোগে অ্যাক্সেস আছে এমন যে কেউ YouTube ভিডিও দেখতে এবং নিজস্ব ভিডিও শেয়ার করতে পারেন৷ আপনি দুটি ধরণের YouTube চ্যানেল তৈরি করতে পারেন।
একটি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট বা একটি ব্র্যান্ড অ্যাকাউন্ট৷ আপনি আপনার iPhone বা Android ফোনে YouTube মোবাইল সাইট ব্যবহার করে একটি চ্যানেল তৈরি করতে পারলেও, এটি একটি PC বা Mac কম্পিউটারে করা সহজ৷
প্রতিদিন, ইউটিউব ব্যবহারকারীরা এক বিলিয়ন ঘন্টার বেশি ইউটিউব ভিডিও দেখেন। ইউটিউবের ব্যবহার ক্রমাগত বাড়তে থাকায়, আয় করার সুযোগ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এইজন্য ইউটিউবে একটি একাউন্ট খোলার সিদ্ধান্ত একটি যুগোপযুগী সিদ্ধান্ত। ইউটিউব একাউন্ট খোলা একদম পানির মতো সহজ।আপনি খুব সহজে ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারবেন।
আমরা যেমন টিভিতে বিভিন্ন চ্যানেলে নানা রকম ভিডিও দেখি তেমনি ইউটিউবে আপনার একটি চ্যানেল থাকবে, যার মালিক হবেন আপনি নিজেই। আপনার চ্যানেলে আপনি আপনার দর্শকদের জন্য ভিডিও শেয়ার করবেন।
একটা কথা চিন্তা করুন তো, আমরা ইউটিউবে যে ভিডিওগুলো দেখি সেগুলো কোথা থেকে আসে?একদম ঠিক ধরেছেন, কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা এই ভিডিওগুলো আপলোড করে থাকে। বোঝা গেলো আমার আপনার মতো সাধারন মানুষরাই ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে।
এখন প্রশ্ন হলো সবাই কী ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করতে পারে? এর উত্তর হলো, জ্বি হ্যাঁ সবাই আপলোড করতে পারবে।
এর জন্য তার একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে। আপনার যদি কোনো ইউটিউব চ্যানেল না থাকে তাহলে আপনি ইউটিউবে কোনো ভিডিও আপলোড করতে পারবেন না।
বর্তমানে ইউটিউব বিশ্বের সব থেকে বড় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম। আপনি যদি ইউটিউবের যাবতীয় নিয়মাবলী মেনে একটি একাউন্ট খোলেন তখন সেই একাউন্টকে বলা হবে প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল।
যেহেতু আপনি ইউটিউবে একটি একাউন্ট খুলবেন সেহেতু YouTube নিয়মাবলী মেনে চলতে হবে। আপনি যখন ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করবেন তখন আপনি নিজেই একজন ইউটিউবার। আর একজন সফল ইউটিউবার হতে গেলে আপনার র্দীঘ সময় ধরে কাজ করার মানসিকতা থাকতে হবে।
কিন্তু আপনি যদি ইউটিউবের নিয়মাবলী না মানেন তাহলে এই প্ল্যাটফর্মে টিকে থাকা আপনার জন্য মুশকীল হয়ে যাবে।
যারা এই সেক্টরে নতুন তাদের ধারণা ইউটিউব চ্যানেল খুলতে অনেক কিছুর দরকার হয়। আসলে এটা সর্ম্পূণ ভুল ধারণা। আসলে চ্যানেল খুলতে তেমন কিছুর দরকার পড়ে না। কিছু ডিভাইস থাকলে অনায়াষে একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলা সম্ভব।
আসুন আমরা জেনে নেই একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কী কী লাগে
ব্যাস এ দুটো জিনিস হলে আপনি আনাযাসে একটি ইউটিউব একাউন্ট খুলতে পারবেন। এছাড়াও আপনাকে কিছু ট্রিকস জানতে হবে, যা আমি এখন ধারাবাহিকভাবে ধাপ গুলো আলোচনা করার চেষ্টা করবো।
ইউটিউব চ্যানেল সাধারণত ২ প্রকারঃ
এই পোস্টে, আমরা একটি YouTube চ্যানেল তৈরি করার বিষয়ে আপনার যা জানা দরকার তা কভার করব। আপনি যদি YouTube-এ সম্পূর্ণ নতুন হন, তাহলে টেনশন করবেন না। প্রক্রিয়াটি তুলনামূলকভাবে সহজ এবং আপনার চ্যানেল তৈরি করতে মাত্র কয়েক মিনিট সময় লাগবে।
কীভাবে একটি ব্র্যান্ডেড ইউটিউব চ্যানেল শুরু করবেন:
আপনার ফোনে যদি ইউটিউব আ্যপ ও জিমেইল একাউন্ট থাকে আর ওই জিমেইলে যদি ইউটিউব চ্যানেল খোলা না থাকে তাহলে মোবাইল থেকে ইউটিউব চ্যানেল খোলা অত্যন্ত সহজ।মোবাইল দিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্যঃ
এখন আপনার মোবাইলে যদি ইতোমধ্যে ইউটিউব চ্যানেল খোলা থাকে এবং আপনি যদি নতুন করে আরেকটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে চান তাহলে সেটাও পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে যা যা করতে হবেঃ
উপরের পদ্ধতি সঠিকভাবে অনুসরণ করলে আপনি অনায়াষে নতুন একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারবেন ।
আপনার জিমেইলে যদি ইউটিউব চ্যানেল খোলা না থাকে সেক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার করে ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্যঃ
এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করলে আপনার ইউটিউব চ্যানেল খোলা হয়ে যাবে।
এখন আসুন,
আপনার ইতোমধ্যে একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে সেক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার করে কীভাবে আপনি নতুন ইউটিউব চ্যানেল খুলবেন।
উপরের পদ্ধতি সঠিকভাবে অনুসরণ করলে আপনি কম্পিউটার ব্যবহার করে সহজে নতুন একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারবেন।
ইউটিউব চ্যানেল খোলা তো শিখে গেলাম এবার পালা চ্যানেল ভেরিফাই করা। ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর মোইল নম্বর দিয়ে ভেরিফাই না করা র্পযন্ত কিছু ফিচার লক করা থাকে। যেমনঃ
ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করতে একটি মোবাইল নম্বর দরকার হবে। ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করতেঃ
উপরের পদ্ধতি সঠিকভাবে অনুসরণ করলে আপনার ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই হয়ে যাবে এবং আপনি ভেরিফাইড চ্যানেলের ফিচার গুলো উপভোগ করতে পারবেন ।
ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর এবার পালা ভিডিও আপলোড করার। মোবাইল দিয়ে ভিডিও আপলোড করতেঃ
কম্পিউটার থেকে ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও আপলোড করার পদ্ধতিও প্রায় এই ধরনের।কম্পিউটার দিয়ে ভিডিও আপলোড করতেঃ
সকল ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন হলে আপনার ভিডিওটি ইউটিউবে আপলোড হয়ে যাবে এবং আপনাকে একটি ভিডিও শেয়ার এর লিংক দেওয়া হবে।
বর্তমান সময়ে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করাটা অনেক জনপ্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনিও কী ইউটিউব থেকে টাকা ইনকামের কথা ভাবতেছেন? তাঞলে সর্বপ্রথম আপনাকে জানতে হবে ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন সম্পর্কে।
ইউটিউব চ্যানেলের মধ্যে একটি ফিচার রয়েছে যা মনিটাইজেশন নামে পরিচিত। এই মনিটাইজেশন অপশনটি যখন আপনি চালু করবেন আপনার চ্যানেলে থাকা ভিডিও গুলোর সাথে কিছু বিজ্ঞাপন দেখানো হবে। এই বিজ্ঞাপনগুলো দেখানোর বিপরীতে ইউটিউব আপনাকে কিছু টাকা প্রদান করবে।অর্থাৎ মনিটাইজেশনের ফলে আপনি আপনার চ্যানেলের ভিডিওগুলোতে বিজ্ঞাপন দেখানোর অনুমতি দিচ্ছেন । এক্ষেত্রে আপনার ভিডিও গুলোতে যে পরিমান টাকার বিজ্ঞাপন দেখানো হবে তার ৪৫% গুগল নিজে রাখবে এবং বাকী ৫৫% আপনাকে প্রদান করবে Google AdSense account এর মাধ্যমে।
ইউটিউব চ্যানেলের জন্য আপনাকে কিছু পলিসি মানতে হবে। নিচে এগুলো বর্ণনা করা হলোঃ
১। অন্যের ভিডিও কখনো আপলোড করবেন নাঃ আপনি আপনার চ্যানেলে আপনার তৈরিকৃত ভিডিও আপলোড করবেন। অন্য কারো ভিডিও আপলোড করলে আপনি কপিরাইটের আইনে পড়তে পারেন।আপনার চ্যানেলে পরাপর ৩ টি কপিরাইট স্ট্রাইক পড়লে আপনার চ্যানেল ইউটিউব থেকে ডিলিট হয়ে যাবে। আর কখনো আপনি চ্যানেল খুলতে পারবেন না।
২। অতিরিক্ত ভিডিও শেয়ার করবেন নাঃ আপনি যদি অতিরিক্ত ভিডিও শেয়ার করেন তাহলে ইউটিউব আপনার চ্যানেলকে ডিজেবল করে দিতে পারে।তাহলে আপনার টাকা ইনকামের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। নিজের ভিডিওগুলো সোশাল মিডিয়া গুলোতে অল্প অল্প শেয়ার করবেন। কীন্তু বেশি শেয়ার আপনার চ্যানেলের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
৩। Nudity and sexual content শেয়ার করবেন নাঃ অশ্লীল কোনো ভিডিও আপনার চ্যানেলে কখনোই আপলোড করবেন না। তাঞলে আপনার চ্যানেল চিরদিনের জন্য ব্লক বা ডিলিট হয়ে যাবে।
৪। হ্যাকীং জাতীয় কোনো ভিডিও আপলোড করবেন নাঃ হ্যাকীং শিখানো বা হ্যাকীং বিষয়ে বলা হচ্ছে এই জাতীয় কোনো ভিডিও আপলোড করবেন না।
৫। Low quality ভিডিও আপলোড করবেন নাঃ ইউটিউব তাদের গ্রাহককে সবসময় ভালো সার্ভিস দেওয়ার চেষ্টা করে। Low quality এর ভিডিওতে সাধারণত বিজ্ঞাপন দেখানো হয় না তাই এতে আপনার এনকাম হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। তাই Low quality ভিডিও আপলোড করা থেকে বিরত থাকবেন।
আজকের বিশ্বে ইউটিউব একটি ভিডিও শেয়ারিং সাইট। কেউ বিনোদনের জন্য এটি ব্যবহার করে কেউবা শিক্ষণীয় কিছু দেখার জন্য এটি ব্যবহার করে থাকে।
অনেকে আবার এটি ব্যবহার করে অর্থ উপার্জন করে থাকে। কেউ কেউ নিজেদের সৃষ্টিশীল কিছু সবার সাথে শেয়ার করার জন্য এটি ব্যবহার করে।
ভিডিও শেয়ারিং বা অর্থ উপার্জন যেকোনো কাজে একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকা আবশ্যক। উপরের নির্দেশনা অনুসরণ করে আপনি অনায়াসে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারবেন।