মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ড দুটি দুই কোম্পানি হলেও এদের মধ্যে তেমন পার্থক্য নেই। তবে মাস্টার কার্ডের থেকে ভিসা কার্ডের ব্যবহারকারী বেশি। মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ডের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক পেমেন্ট করা হয়।
ইলেকট্রনিক পেমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে চার কোম্পানির আধিপত্য রয়েছে। ভিসা, মাস্টারকার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস এবং ডিসকভার এর মাধ্যমে বিশ্বের বেশিরভাগ কার্ড পেমেন্ট করা হয়।
চলুন বিশ্বের দুটি বৃহত্তম পেমেন্ট কার্ড নেটওয়ার্ক প্রসেসরের মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ডের পার্থক্য জেনে নি।
মাস্টার কার্ড কী? মাস্টার কার্ড যুক্তরাষ্ট্রের বহুজাতিক আর্থিক সার্ভিস কর্পোরেশন ।মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে দুই দেশের কারেন্সি ব্যবহার করতে পারবেন। মাস্টার কার্ড দিয়ে দেশে বসে অন্য দেশের পণ্য ই-কর্মাসের মাধ্যমে ক্রয় করতে পারবেন। পৃথিবীর যে কোনো প্রতিষ্ঠানের পন্য ক্রয় করে পেমেন্ট করতে পারবেন মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে।
মাস্টার কার্ড ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশনের হেডকোয়ার্টার পারচেজ, নিউইয়র্কে এর সদর দপ্তর অবস্থিত। সারা পৃথীবি জুড়ে অসংখ্য মানুষ মাস্টার কার্ড ব্রান্ডের ক্রেডিট, ডেবিট এবং প্রিপেইড কার্ড ব্যবহার করে বিশ্বের যে কোনো প্রতিষ্ঠানের পণ্য ক্রয় করে পেমেন্ট করে। ২০০৬ সাল থেকে বিশ্ব জুড়ে মাস্টার কার্ড ওয়ার্ল্ডওয়াইড সর্বজনীনভাবে ব্যবসা করা কোম্পানি।
আপনি মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী বিশ মিলিয়ন আউটলেটগুলির মধ্যে যে কোনো টি তে কেনাকাটা করতে পারবেন।
আমেরিকা ভিওিক একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি হলো ভিসা যা পৃথিবীব্যাপী আর্থিক সেবা প্রদান করে। ভিসা কার্ডের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্টের মানুষ টাকা তুলতে পারে এবং ভিসা কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটা ও করতে পারে। কাস্টমার এবং মার্চেন্ট ব্যাংক এর মধ্যে থার্ড পার্টি হিসাবে ভিসা ব্রান্ডটি কাজ করে থাকে।
ভিসা কার্ডের ভিসা লোগো দেখেই একটি ভিসা কার্ড সনাক্ত করা যায়। বণিক এবং ব্যবসার দ্বারা পৃথিবীর ২০০ টির ও বেশি দেশে ভিসা কার্ড চালু রয়েছে। ভিসা কার্ড ব্যাবহারকারীর তথ্য সংরক্ষণ করার জন্য কার্ডে মাইক্রো চিপ রয়েছে এবং কার্ডে ১৬ সংখ্যার নম্বর মুদ্রিত রয়েছে।
ভিসা বনাম মাস্টারকার্ড নিয়ে বিতর্ক করার সময়, আপনি প্রতিটি নেটওয়ার্কের সুবিধাগুলি খতিয়ে দেখতে চাইবেন যদি আপনি একটির পরিবর্তে একটি বেছে নেওয়ার বিষয়ে মনে করেন।
মাস্টার ও ভিসা কার্ডের মধ্যে পার্থক্য হলো উভয় কার্ডের কোম্পানি যে পেমেন্ট নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে তাতে কাজ করে।
ভিসা কার্ড এবং মাস্টার কার্ড উভয়ই প্রায় একই রকম সুবিধা দেয়।ভিসা কার্ড এবং মাস্টার কার্ড সর্ম্পকে তো কীছু ধারণা পাওয়া গেলো । এবার আমরা মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ডের পার্থক্য সর্ম্পকে জানবো।
ভিসা কার্ড ও মাস্টার কার্ড এর ব্যবহারগত দিক থেকে তেমন পার্থক্য নেই। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অনলাইন ও ফিজিক্যাল মার্কেটে ভিসা কার্ড ও মাস্টার কার্ড এর পেমেন্ট পদ্ধতি চালু রয়েছে ।ভিসা কার্ড ও মাস্টার কার্ড এর মধ্যে যে কোনো একটি যে কেউ বা উভয় কার্ডই যে কেউ ব্যবহার করতে পারবেন।
সুতরাং বলা যায় ভিসা কার্ড ও মাস্টার কার্ড এর গ্রহনযোগ্য ও ব্যবহারগত দিক থেকে তেমন পার্থক্য নেই।ভিসা কার্ড ও মাস্টার কার্ড এই দুই ধরনের কার্ডই বেশির ভাগ দেশে ব্যবহার করা যায়।
ভিসা কার্ড ও মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে অনলাইন কেনাকাটার ক্ষেত্রে আলাদা ধরনের অনলাইন প্রটেকশন ব্যবহার করতে দেখা যায়।সিকীউরড কোড স্কীম নামে মাস্টার কার্ড এক ধরনের সুরক্ষা নিয়ে থাকে।আর ভেরিফাইড বাই ভিসা স্কীম নামে ভিসা কার্ড এক ধরনের সিস্টেম ব্যবহার করে।
ভিসা কার্ড ব্যবহারকারীদের জন্য ভিসা ইনফিনিট ভ্রমন ও জরুরী সহায়তা সার্ভিসর অফার দেয় আর এই সুবিধা টি বিশ্বের যে কোনো জায়গা থেকে জরুরী অবস্থায় গ্রহন করা যাবে।অন্যদিকে মাস্টার কার্ড দ্বারা যে কোনো স্থানে,যে কোনো সময়ে এবং যে কোনো ভাষায় উপলন্ধ করার জন্য গ্লোবাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস সরবরাহ করে।এছাড়া আপনার চুরি হওয়া কার্ড প্রতিস্থাপন করতে,নগদ,অগ্রিম এবং আরও অনেক কীছু পেতে সাহায্য করে।
ভিসা কার্ড- সিগনেচার হলো ভিসা কার্ডের মিড-রেঞ্জ প্যাকেজের নাম।বেসিক প্যাকেজের পাশাপাশি সিগনেচার এ অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন- অনলাইন পোর্টালে ডিসকাউন্ট পাওয়া যায়, তারপরে ডাইনিং,বিনোদন,ভ্রমন এবং ক্রীড়া ইভেন্টে ডিল এছাড়াও ২৪*৭ আঞ্চলিক সেবা এসব সুবিধা পাওয়া যায়।
মাস্টার কার্ড-ওয়ার্ল্ড হলো মাস্টার কার্ডের মিড-রেঞ্জ প্যাকেজের নাম।মাস্টার কার্ডের ওয়ার্ল্ড প্যাকেজ থেকে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়।যেমন- ১২০ দিনের সুরক্ষার সাথে ডেটিকেটেড ব্যাক্তিগত ভ্রমন পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করে এছাড়া কোনো হোটেলের রুম আপগ্রেড ,দেরিতে চেক আউট ইত্যাদি মিড-রেঞ্জ সেবা দিয়ে থাকে মাস্টার কার্ড।
ভিসা এবং মাস্টারকার্ড উভয়ই অত্যন্ত একই রকমের সুবিধা অফার করে এবং একটির উপর অন্যটিকে বেছে নেওয়ার ফলে কোনো উল্লেখযোগ্য পার্থক্য হবে না।
এন্ট্রি লেভেল কার্ডগুলিতে, ভিসা এবং মাস্টারকার্ডের মধ্যে খুব কম পার্থক্য রয়েছে, কারণ উভয়ই মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলির একই স্যুট প্রদান করে। যাইহোক, মাস্টারকার্ড এর ওয়ার্ল্ড এবং ওয়ার্ল্ড এলিট স্তরের কার্ডগুলিতে চিত্তাকর্ষক বিশেষ বিলাসবহুল অফারগুলি অন্তর্ভুক্ত করে, যা বড় ব্যয়কারীদের জন্য আকর্ষণীয় হতে পারে।
উভয় কোম্পানির ব্যবসায়িক মডেল খুব একই রকম। ভিসা এবং মাস্টারকার্ড সরাসরি জনসাধারণের কাছে কার্ড ইস্যু করে না, বরং অংশীদার সদস্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান যেমন ব্যাংক এবং ক্রেডিট ইউনিয়নগুলির মাধ্যমে। সদস্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান তারপর ব্যক্তি এবং ব্যবসার জন্য কার্ড ইস্যু করে, হয় সরাসরি বা এয়ারলাইন, হোটেল, বা খুচরা ব্র্যান্ডগুলির সাথে অংশীদারিত্বে।
সুতরাং ভিসা বনাম মাস্টারকার্ড নয়, এখানে আপনি কী সুবিধা পাবেন তা নির্ভর করে কোন ব্যাংক থেকে কার্ড নিচ্ছেন তার উপর।
উপরে উল্লেখিত বর্ননায় ভিসা,মাস্টার কার্ড কী ,ভিসা কার্ড ও মাস্টার কার্ডের এর মধ্যে পার্থক্য কী ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এত সময়ে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।