Bangla courses
February 3, 2023

সামাজিক সংগঠনের কমিটি গঠনের নিয়ম, নীতিমালা ,পদ সমূহ

যে কোনো পরিবেশে শৃঙ্খলা রক্ষা এবং নিয়ম-কানুন নির্ধারণের জন্য সামাজিক সংগঠন কমিটি অপরিহার্য ভুমিকা পালন করে। একটি সামাজিক সংগঠন পরিচালনার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল - নীতিমালা বা গঠনতন্ত্র।

প্রতিটি কমিটির নিজস্ব উদ্দেশ্য, নিয়ম ও পদ্ধতি রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ধরনের উপর নির্ভর করে, এই নিয়ম, নীতি এবং পদসমূহ পরিবর্তিত হতে পারে।

প্রতিষ্ঠানের জন্য ভাল সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হওয়ার জন্য প্রতিটি নীতির পিছনে কারণ এবং প্রেরণাগুলি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। এই ব্লগ পোস্টে, আমরা সামাজিক সংগঠন কমিটির বিভিন্ন নিয়ম, নীতি, এবং অবস্থানগুলি এবং কীভাবে তারা সংস্থাকে প্রভাবিত করে তা অন্বেষণ করব৷

সামাজিক সংগঠন কমিটিগুলির বিভিন্ন ভূমিকা এবং কীভাবে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং লক্ষ্যগুলি অর্জনের জন্য ব্যবহার করা হয় তা বোঝার মাধ্যমে আমরা আরও ভাল নেতা হতে পারি এবং আমাদের সংস্থাগুলির জন্য আরও ভাল সিদ্ধান্ত নিতে পারি।

সামাজিক সংগঠন কাকে বলে

সামাজিক সংগঠন কমিটি হল এমন ব্যক্তিদের দল যারা তাদের নিজ নিজ সম্প্রদায়ের সামগ্রিক কল্যাণকে প্রভাবিত করে এমন নিয়ম, নীতি এবং অবস্থান তৈরি করতে একসঙ্গে কাজ করে।

সাধারণত, এই কমিটিগুলিকে প্রবিধান বা মান নির্ধারণের দায়িত্ব দেওয়া হয় যা একটি নিরাপদ এবং উত্পাদনশীল পরিবেশ নিশ্চিত করবে। কমিটির সদস্যরা সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের মতামত, অভিজ্ঞতা এবং অবদান বিবেচনা এবং আলোচনা করার জন্য দায়ী।

তারা আইন, প্রবিধান, এবং নীতিগুলি গঠনে অবদান রাখে যা সম্প্রদায়ের জন্য ইতিবাচক ফলাফলের প্রচারে কাজ করবে। সামাজিক সংগঠন কমিটি একটি সম্প্রদায়কে নিরাপদ ও সুস্থ রাখার জন্য অত্যাবশ্যক।

সামাজিক সংগঠনের ধরণ এবং বৈশিষ্ট্য

একটি সামাজিক সংগঠনের সাফল্যের অংশ হিসাবে, সামাজিক সংগঠনের বিভিন্ন প্রকার এবং বৈশিষ্ট্য যা বিদ্যমান থাকতে পারে তা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক সংস্থাগুলিকে দুটি প্রধান বিভাগে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে: স্বেচ্ছাসেবী এবং অনিচ্ছাকৃত।

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি হল সেগুলি যেগুলি কোনও ধরণের আইনি কর্তৃত্ব বা সরকারী আদেশের উপর ভিত্তি করে নয়; বরং, সদস্যরা ভাগ করা লক্ষ্য, আগ্রহ বা মূল্যবোধের জন্য একত্রিত হয়।

অন্যদিকে, অনিচ্ছাকৃত সংস্থাগুলি কিছু ধরণের আইনি কর্তৃত্ব বা সরকারী আদেশের উপর ভিত্তি করে। উভয় ক্ষেত্রেই, সামাজিক সংস্থাগুলির কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা সদস্যদের তাদের কমিটি গঠন করার সময় বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে রয়েছে আকার, গঠন, উদ্দেশ্য এবং সংস্কৃতি।

এই বৈশিষ্ট্যগুলি বোঝা সামাজিক সংগঠনগুলিকে তাদের কমিটির জন্য কার্যকর এবং দক্ষ নিয়ম, নীতি এবং অবস্থান তৈরি করতে সহায়তা করতে পারে।

সামাজিক সংগঠনের কমিটি গঠনের নিয়ম

কমিটি গঠন যেকোনো সামাজিক সংগঠনের কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একটি কমিটি এমন একদল লোককে নিয়ে গঠিত যারা প্রতিষ্ঠানের নীতি, নিয়ম এবং পদের উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়ী। কমিটি যাতে কার্যকর ও ফলপ্রসূ হয় তা নিশ্চিত করতে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি।

প্রথমত, কমিটি এমন লোকদের নিয়ে গঠিত হওয়া উচিত যারা কারণ সম্পর্কে উত্সাহী। তাদের তাদের মিশনে নিবেদিত হওয়া উচিত এবং একটি ইতিবাচক প্রভাব আনতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হওয়া উচিত।

দ্বিতীয়ত, কমিটি লিঙ্গ, বয়স, জাতি এবং পটভূমির ক্ষেত্রে বৈচিত্র্যময় হওয়া উচিত। এটি নিশ্চিত করতে সাহায্য করে যে প্রত্যেকের দৃষ্টিভঙ্গি আলোচনায় প্রতিনিধিত্ব করা হয়।

তৃতীয়ত, কমিটিকে ঐক্যমত্যের জন্য সচেষ্ট হতে হবে। প্রত্যেককে তাদের মতামত প্রকাশের সমান সুযোগ দেওয়া উচিত এবং কমিটিকে এমন সিদ্ধান্তে আসতে হবে যা সকল সদস্যের কাছে সম্মত হয়।

অবশেষে, কমিটির স্পষ্ট এবং সংজ্ঞায়িত ভূমিকা থাকা উচিত। এটি প্রত্যেককে তাদের দায়িত্ব বুঝতে সাহায্য করে এবং কমিটি যে সুসংগঠিত এবং দক্ষ তা নিশ্চিত করে।

কমিটি গঠন করার নিয়ম

সামাজিক সংগঠন কমিটি গঠনের জন্য কয়েকটি নিয়ম ও নীতি অনুসরণ করা প্রয়োজন। এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে কমিটি গঠনের সাথে জড়িত সকলকে বন্ধুত্বপূর্ণ এবং স্বাগত জানানো উচিত।

অন্যের চিন্তাভাবনা এবং মতামতকে সম্মান করার সাথে সাথে প্রত্যেককে অবদান রাখার এবং শোনার সমান সুযোগ দেওয়া উচিত। কমিটি গঠন সংক্রান্ত কথোপকথনে জড়িত থাকার সময় সকল সদস্যদের সম্মান ও সহানুভূতি প্রদর্শন করা উচিত।

সর্বোপরি, একটি উন্নত সমাজ গঠনে সহায়তা এবং এর সকল সদস্যদের উপকার করার উদ্দেশ্যে কমিটি গঠন করা উচিত।

একটা সামাজিক সংগঠনের কী কী পদ থাকে?

একটি সামাজিক সংগঠন এর পদ সমূহ নিচে দেওয়া হল- 

  1. সভাপতি
  2. সহ-সভাপতি (ঐচ্ছিক)
  3. সাধারন সম্পাদক
  4. সহকারী সাধারন সম্পাদক (ঐচ্ছিক)
  5. সাংগঠনিক সম্পাদক
  6. সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ঐচ্ছিক)
  7. প্রচার সম্পাদক
  8. সহ-প্রচার সম্পাদক (ঐচ্ছিক)
  9. কোষাধ্যক্ষ
  10. ক্রীড়া সম্পাদক ( প্রয়োজন হলে) 
  11. সহ-ক্রীড়া সম্পাদক (ঐচ্ছিক)
  12. সমাজসেবা-বিষয়ক সম্পাদক (প্রয়োজন হলে) 
  13.  উপ-সমাজসেবা-বিষয়ক সম্পাদক  (ঐচ্ছিক)
  14. ত্রাণ ও দুর্যোগ সম্পাদক (প্রয়োজন হলে)
  15. উপ-ত্রাণ ও দুর্যোগ সম্পাদক  (ঐচ্ছিক)
  16. উন্নয়ন সম্পাদক (প্রয়োজন হলে)
  17. উপ-উন্নয়ন সম্পাদক (প্রয়োজন হলে)
  18. ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক (প্রয়োজন হলে)
  19. ছাত্রবৃত্তি সম্পাদক (প্রয়োজন হলে)
  20. দপ্তর সম্পাদক
  21. সদস্যমণ্ডলী

সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য স্থির করা

সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ একটি সফল সামাজিক সংগঠন কমিটি গঠনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই লক্ষ্যগুলি সাবধানে চিন্তা করা উচিত, সংস্থার মিশন, দৃষ্টিভঙ্গি এবং মূল্যবোধকে বিবেচনায় নিয়ে।

একবার প্রতিষ্ঠিত হলে, এই লক্ষ্যগুলি কমিটির সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ার জন্য একটি নির্দেশিকা হিসাবে কাজ করবে এবং কমিটি যাতে ট্র্যাকে থাকে তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে।

নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা গুরুত্বপূর্ণ যা সামগ্রিক লক্ষ্যের দিকে অগ্রগতি পরিমাপ করতে সাহায্য করবে। এটি কমিটিকে মনোযোগী এবং দায়বদ্ধ থাকতে সাহায্য করবে এবং আশা করি একটি সফল ফলাফলের দিকে নিয়ে যাবে।

কার্যক্রম পরিচালনা নীতিমালা

অপারেটিং পলিসি হল সেই নির্দেশিকা যা সামাজিক সংগঠন কমিটির কার্যক্রম পরিচালনা করে। সংগঠনটি সুচারুভাবে এবং দক্ষতার সাথে চলতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি কমিটি মেনে চলা নিয়মের একটি সেট থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

এই নিয়মগুলির মধ্যে বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যেমন মিটিংগুলি কীভাবে পরিচালিত হবে, কীভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং কীভাবে জমা এবং অনুরোধগুলি উপস্থাপন করতে হবে।

আমাদের অপারেটিং নীতি কঠোর নিয়মের সেটের পরিবর্তে নির্দেশিকাগুলির একটি বন্ধুত্বপূর্ণ এবং নমনীয় সেট হিসাবে ডিজাইন করা হয়েছে৷

আমরা চাই আমাদের কমিটিগুলো সৃজনশীল হওয়ার, বাক্সের বাইরে চিন্তা করার এবং মহান ধারণা নিয়ে আসার স্বাধীনতা থাকুক। আমরা বিশ্বাস করি যে এর ফলে আমাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য আরও ভাল উদ্যোগ এবং প্রকল্প হবে।

সামাজিক সংগঠনের পরিচ্ছন্ন নীতিমালা বা গঠনতন্ত্র

একটি কার্যকর কমিটি গঠনের জন্য একটি পরিষ্কার সংবিধান বা সামাজিক সংগঠনের মূলনীতি তৈরি করা অপরিহার্য। সংবিধানে সংগঠনের মিশন, লক্ষ্য এবং মূল্যবোধের পাশাপাশি প্রতিটি কমিটির সদস্যের দায়িত্ব ও ভূমিকার রূপরেখা দেওয়া অপরিহার্য।

সংবিধানে সদস্যদের অধিকার এবং বিরোধ নিষ্পত্তির পদ্ধতি সম্পর্কেও স্পষ্ট বিবৃতি দেওয়া উচিত। শেষ পর্যন্ত, সংবিধান একটি জীবন্ত দলিল হিসাবে বিদ্যমান থাকা উচিত যা সংস্থার বিকাশের সাথে সাথে ক্রমাগত আপডেট এবং সংশোধিত হয়।

একটি সুস্পষ্ট এবং সংক্ষিপ্ত সংবিধান তৈরি করে, কমিটি তার লক্ষ্যে ফোকাস করতে পারে এবং নিশ্চিত করতে পারে যে সমস্ত সদস্য একই লক্ষ্যে কাজ করছে।

উপসংহারে, সামাজিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য একটি সামাজিক সংগঠন কমিটি গঠন অপরিহার্য। সংস্থাকে তার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করার জন্য নিয়ম, নীতি এবং পদগুলি স্থাপন করা উচিত।

গ্রুপের সাফল্য নিশ্চিত করার জন্য কমিটি এমন সদস্যদের নিয়ে গঠিত হওয়া উচিত যাদের দৃষ্টিভঙ্গি এবং দক্ষতার বিস্তৃত পরিসর রয়েছে। কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং এর নিয়মকানুন মেনে চললে সামাজিক সংগঠনটি সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে।

আরও পড়ুন

August 18, 2023
উপবৃত্তির জন্য আবেদন পত্র লেখার নিয়ম
গণপ্রজাতন্তী বাংলাদেশ সরকার স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান করে থাকেন, যারা আর্থিক…
July 7, 2023
পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
বিদেশে যেতে বা দেশের মধ্যে কোথাও প্লেনে চলাচল করার জন্য পাসপোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই…
May 22, 2023
বাংলাদেশের সকল থানার ওসির নাম ও নাম্বার [Updated 2023]
এখনে বাংলাদেশের সকল বিভাগ ও জেলার সকল থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ওসির সরকারী মোবাইল নাম্বার এর লিস্ট…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram
Share via
Copy link