Bangla courses
July 23, 2022

বিটকয়েন কী? Bitcoin (₿) -এর ইতিহাস ও কীভাবে উপার্জন করা যায়

বিটকয়েন (Bitcoin or BTC) একটি ডিজিটাল মুদ্রা যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। এটি একটি বিকেন্দ্রীকৃত ডিজিটাল মুদ্রা (যা অনেকটা টাকার মতো - কিন্তু এটির ফিজিক্যাল ফর্মে পাওয়া যায় না)।

বিটকয়েন একটি ডিজিটাল মুদ্রা যা ঐতিহ্যবাহী মুদ্রা ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটাচ্ছে। প্রচলিত মুদ্রার বিপরীতে, এটি বিকেন্দ্রীকৃত এবং কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে নয়।

বিটকয়েন হল একটি সীমাহীন মুদ্রা যা যে কাউকে সহজেই এবং দ্রুত অর্থ পাঠাতে সক্ষম করে, কার্যত বিশ্বের যে কোন জায়গায়। এই ডিজিটাল কারেন্সির পিছনের বিপ্লবী প্রযুক্তি এটিকে আর্থিক বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলির মধ্যে একটি করে তুলেছে।

বিটকয়েন এর নিয়ন্ত্রণের অভাব এবং এর প্রাপক ও গ্রাহকে নাম প্রকাশ না করার কারণে অন্তর্নিহিত ঝুঁকি বহন করে। ফলস্বরূপ, জালিয়াতি এবং অর্থপাচার সম্পর্কিত সম্ভাব্য ঝুঁকি। সুতরাং বিনিয়োগ করার আগে এই ঝুঁকিগুলি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।

এই ব্লগ পোস্টে, আমরা বিটকয়েন কি, এর সুবিধা এবং এর পেছনের প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা করব।

বিটকয়েন কি?

বিটকয়েন হল একটি বিকেন্দ্রীভূত ডিজিটাল মুদ্রা যা আপনি ব্যাংকের মত মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই সরাসরি কীনতে, বিক্রি করতে এবং বিনিময় করতে পারেন।

বিটকয়েন কি
বিটকয়েন মুদ্রার প্রতীক ₿

বিটকয়েন একটি ডিজিটাল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সি। এটি কাগজে ছাপা হয় না। এটি হল একটি ডিজিটাল, বিকেন্দ্রীকৃত মুদ্রা যা একটি পিয়ার-টু-পিয়ার নেটওয়ার্কে কাজ করে।

বিটকয়েন শারীরিক আকারে বিদ্যমান নেই; বরং, এটি ব্লকচেইন নামে পরিচিত একটি সুরক্ষিত, বিতরণ করা লেজার সিস্টেমের মাধ্যমে ইলেকট্রনিকভাবে রাখা এবং স্থানান্তর করা হয়। এই মুদ্রাটি ভার্চুয়াল বা শুধু নেট জগতেই ব্যবহার করা হয়।

যার নেই কোন প্রাতিষ্ঠানিক ব্যা্ংক, সংস্থা বা নিয়ন্ত্রনকারী দেশ। যার ফলে জানার উপায় নেই বর্তমানে কত বিটকয়েন আছে।

এটি বিশ্বের সবচেয়ে সুপরিচিত ক্রিপ্টোকারেন্সি। এর জনপ্রিয়তা অন্যান্য অনেক ক্রিপ্টোকারেন্সির বিকাশকে অনুপ্রাণিত করেছে।

বিটকয়েন যেকোন সম্পদের মতো নগদ বিনিময় করা যেতে পারে। অনলাইনে অসংখ্য ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ রয়েছে যেখানে মানুষ ব্যক্তিগতভাবে বা প্ল্যাটফর্মের লেনদেন করতে পারে।

বর্তমানে, ছোট ও বড় অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ইকমার্স এই ধরেনের ক্রিপ্টো গ্রহণ করে দেয়। অন্য মুদ্রায় রূপান্তর করার (যেমন ডলার থেকে টাকা) জন্য কোনো অফিসিয়াল মেকানিজম নেই। আপনাকে তৃতীয়পক্ষের সাথে লেনদেন করতে হবে।

  • আগস্ট 2008 সালে, Bitcoin.org ডোমেইন নাম নিবন্ধিত হয়েছিল।কীন্তু, এই ডোমেনটি WhoisGuard Protected, মানে যে ব্যক্তি এটি নিবন্ধন করেছেন তার পরিচয় গোপন করা ।
  • 2009 সালে চালু হওয়া, মূলধনের উপরে ভিত্তি করে বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি।
  • ফিয়াট মুদ্রার বিপরীতে, বিটকয়েন ব্লকচেইন নামে পরিচিত একটি বিকেন্দ্রীভূত লেজার সিস্টেম ব্যবহার করে তৈরি, বিতরণ, লেনদেন এবং সংরক্ষণ করা হয়।
  • মূল্যের ভাণ্ডার হিসেবে এই মুদ্রার দাম অশান্ত; স্বল্প আয়ুষ্কালে বেশ ঊর্ধ্ব ও নিম্ন দরপতন এর মদ্ধে দিয়ে গেছে।
  • ব্যাপক জনপ্রিয়তা এবং সাফল্যের জন্য প্রথম দিকের ভার্চুয়াল মুদ্রা হিসাবে, অন্যান্য ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলির একটি হোস্টকে অনুপ্রাণিত করেছে।

কেন এটি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে?

  • এটি হ্যাক করা অসম্ভব বেললেই চলে ।
  • ম্যানিপুলেশন এর কোন সুযোগ নেই বলা যায়, কারণ ওপেন সোর্স্ প্রযুক্তি হওয়ায় যে কেউ লেনদেনের তথ্য দেখতে পারে ।
  • এটা জনপ্রিয় অর্থ্ সিষ্টেম হওয়াতে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে অতিরিক্ত চার্জ্ ছাড়াই লেনদেন সম্ভব ।
  • এটি ডিসেন্ট্রালাইজড হওয়াতে বিদ্যুৎ গতিতে লেনদেন সম্পন্ন হয় । ক্রেডিট কার্ডে মত বিটকয়েনের ক্ষেত্রে ডাটা রেকর্ড্ হতে সময় লাগে না । 

এই মুদ্রার প্রধান সমস্যা কোথায়?

  1. এই মুদ্রার অন্যতম সমস্যা হল, কোন কারণে লেনদেন যদি অসম্পন্ন হয়ে যায়, সেই ক্ষেত্রে গ্রহীতা সেবা না পেলেও মুদ্রা ফেরত পাওয়ার কোনই উপায় নেই ।
  2. বিটকয়েন একাউন্ট নষ্ট বা হারিয়ে গেলে একে আর কখনই ফিরে পাওয়া সম্ভব না । আবার বিনিময় মূল্য একেবারেই স্থিতিশীল নয়, এটা উঠা নামা করে । 
  3. এটার ব্যবহার খুবই সীমিত তাই এটাকে ব্যবহার করতে হলে প্রচলিত মুদ্রার সাথে একচেঞ্জ করতে হয় ।
  4. চলমান অর্থের উপর নির্ভ্র করে আমরা অনেক পন্য ক্রেডিটের মা্ধ্যমে ক্রয় করে থাকী । অন্যদিকে বিটকয়েনে নেই কোন ক্রেডিট ব্যবস্থা । এটা যদিও একটা ভাল দিক । 

বিটকয়েন এর ইতিহাস

বিটকয়েন আবিষ্কারক এর পরিচয় জানা যায় নি
বিটকয়েন আবিষ্কারক এর পরিচয় জানা যায় নি

বিটকয়েন 2009 সালে সাতোশি নাকামোটো নামটি ব্যবহার করে একজন, এই ডিজিটাল মুদ্রাজনসাধারণের কাছে প্রবর্তন করেন।২০০৮ সালের অক্টোবার মাসে তিনি একটি ০৯ পৃষ্ঠার একটি গবেষনা ও প্রস্তাবনা অনলাইনে প্রকাশ করেন।

Satoshi Nakamoto হল তার ছদ্মনাম যিনি মূল বিটকয়েনের স্রষ্টা বা আবিষ্কারক। তার বা তাদের আসল পরিচয় ও কখনও যাচাই বা প্রকাশহয়নি। সাতোশি নাকামোতো আসলে একজন মানুষ বা একটি গ্রুপও হতে পারে। নামটি বিটকয়েনের স্রষ্টা বা নির্মাতাদের ছদ্মনাম হতে পারে।

যার নাম ছিলো “Bitcoin: A peer-to-peer Electronic Cash System” । সেখানে প্রথম এই ডিজিটাল ক্রিপ্টোর সম্পর্কে ধারনা দেওয়া হয় । ২০১৮ সালের দিকে এসে এক এর মূল্য দাড়ায় ৮৩০০ ডলার । তবে এই মুদ্রা ক্রয় করার সময় সম্পূর্ণ কয়েন ক্রয় করার দরকার হয় না, আংশিক কেনা যায়।

অর্থাৎ ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর অংশে ক্রয় করা সম্ভব। এই ক্ষুদ্রতর অংশকে সাতোশি বলা হয় । সাতোশি নাকামোতো এর নাম অনুসারে এই নামকরন করা হয়েছে। ১০০ মিলিয়ন সাতোশি মিলে তৈরি হয় এক ₿।

সাতোশি নাকামোতো এমনভাবে নেটওয়ার্ক করেন, যাতে ২১ মিলিয়নের অধিক বিটকয়েন মাইন করা সম্ভব হবে না। এখন মাইন করার মত প্রায় ৩ মিলিয়ন ₿ বাকী রয়েছে যা ২১৪০ সালের মধ্যে মাইন করা হয়ে যাবে।

বিটকয়েন কীভাবে কাজ করে?

বিটকয়েন কিভাবে কাজ করে

পিয়ার টু পিয়ার লেনদেন হওয়ার কারণে দাতা ও গ্রহীতার ওয়ালেট থেকে লেনদেন সম্পন্ন হয় ও গ্রাহকের নির্দিষ্ট ওয়ালেটে জমা থাকে । একজন ব্যবহারকারীকে দুটি “কী” (key)  ব্যবহার করতে হয় । একটি পাবলিক “কী” (key)  এটি সবার জন্য উন্মুক্ত ।

অন্যটি ব্যক্তিগত “কী”(key)  এটি গোপন থাকে যা লেনদেনের নিশ্চয়তার জন্য ব্যবহৃত হয় । আজ পার্যন্ত সকল ট্রানজেকশন ব্লক চেন এর মাধ্যমে রেকর্ড করা থাকে । এক্ষ্রেত্রে পাবলিক “কী” (key)  ব্যবহার করা হয় । ব্লক চেইনে সর্বপ্রথম ট্রানজেকশন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত সব হিসাব সংরক্ষিত আছে এবং বর্তমান অবধি আপডেট হচ্ছে । 

এই প্রোটোকল হল একটি ওপেন-সোর্স কোড যা স্বেচ্ছাসেবকদের একটি নেটওয়ার্ক দ্বারা রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়; নেটওয়ার্কের প্রতিটি কম্পিউটারকে একটি নোড হিসাবে উল্লেখ করা হয়।

জালিয়াতি থেকে রক্ষা করতে এবং সমস্ত লেনদেন বৈধ তা নিশ্চিত করতে, বিটকয়েন একটি ব্লকচেইন নামে পরিচিত একটি বিতরণ করা লেজার সিস্টেম ব্যবহার করে।

এই খাতাটি সমস্ত বিটকয়েন লেনদেন সম্পর্কে তথ্য সঞ্চয় করে যা কখনও হয়েছে। ব্লকচেইনটি খনি শ্রমিকদের দ্বারা রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, যা এমন কম্পিউটার যা প্রতিটি লেনদেন নিশ্চিত এবং যাচাই করার জন্য প্রুফ-অফ-ওয়ার্ক হিসাবে পরিচিত একটি প্রক্রিয়া ব্যবহার করে।

যখন একটি লেনদেন নিশ্চিত করা হয় এবং যাচাই করা হয়, তখন এটি ব্লকচেইনে যোগ করা হয়, যা বিটকয়েন নেটওয়ার্কের সমস্ত মাইনারদের মধ্যে ভাগ করা হয়।

এক বিটকয়েন সমান বাংলাদেশের কত টাকা

23-07-2022 বিটকয়েনের মূল্য

অস্বীকার করার কিছু নেই যে বিটকয়েন ক্রয় অত্যন্ত লাভজনক হয়েছে। এটির মূল্য 2011 সালে $1 থেকে বেড়ে 2021-এ সময়ে সময়ে $60,000-এর বেশি হয়েছে৷ যা হল সবচেয়ে বিখ্যাত ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং ডিজিটাল সোনার একটি রূপ হিসাবে দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করছে৷

ইউরো বা ইউএস-ডলারের মতো ফিয়াট মুদ্রার বিপরীতে, এর মান (বিটিসি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতো একটি একক সত্তা দ্বারা নিয়ন্ত্রন করা হয় না। তাই, দাম সরবরাহ এবং চাহিদা সাথে সাথে উঠানামা করে।

কীন্তু এর দরপনের ইতিহাস ও অনেক ভয়ংকর। সর্ব সাধারন এর দিকথেকে বিবেচনা করলে এই মুদ্রা ক্রয় অনেক ঝুকীপূর্ণ। এই অনিয়ন্ত্রিত মুদ্রার বেশিরভাগ আগ্রহ হল লাভের জন্য বাণিজ্য করা, মাঝে মাঝে ফটকাবাজরা দামকে আকাশের দিকে নিয়ে যায়।

প্রতি দিন প্রতি ঘন্টায় প্রতি মিনিটে এর মূল্য পরিবর্তিত হয় । বর্তমানে বাংলাদেশে ১ বিটকয়েন এর বিনিময়ে ‍২০৪২১৩৮ (বিশ লক্ষ বিয়াল্লিশ হাজার) টাকা হতে পারে বা তার চেয়ে বেশি। এর মূল্য ও ব্যবহার সময়ের সাথে সাথে আরো বৃদ্ধি পাবে।

বিটকয়েন এর মতো অন্য ডিজিটাল মুদ্রা

সম্প্রতি বিশ্বে প্রায় ৫০০+ ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহৃত হচ্ছে । যার মধ্যে লিটকয়েন এবং রিপল বেশ এগিয়ে তবে বিটকয়েন সবার শির্ষে  এখন কেনার জন্য 7টি সেরা ক্রিপ্টোকারেন্সি:

  • Bitcoin (BTC)
  • Ether (ETH)
  • Solana (SOL)
  • Avalanche (AVAX)
  • Binance Coin (BNB)
  • Tron (TRX)
  • Cosmos (ATOM)

বিটকয়েনের লেনদেন - এটা দিয়ে কি কিছু ক্রয় বা বিক্রয় করা সম্ভব

বিটকয়েনের লেনদেন

বিটকয়েনের মাধ্যমে কখন থেকে কীভাবে কিসের বিনিময়ে লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে তা জানা সম্ভব না। এটা বেশির ভাগ ডার্ক ওয়েবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে জানা যায় ২০১০ সালের ২১ মে বিটকয়েনের মাধ্যমে পন্য বিনিময় হয় । ‘লাসজলো’ নামে এক ব্যক্তি ১০ হাজার ₿ বিনিময়ে মাত্র ২৫ ডলারের একটি/দুইটি পিৎজা কেনেন। 

বিনিময়ের মধ্যে মূল্যের পার্থক্য, ফিয়াট মানি ট্রান্সফারের গতি, এবং সালিসি থেকে বিটকয়েন পাওয়ার এই ধরনের সুযোগ খুঁজে পেতে আপনাকে অ্যাক্সেসের সীমাবদ্ধতা বিবেচনা করতে হবে। তাই, অনেকে প্রক্রিয়াটিকে স্বয়ংক্রিয় করার জন্য ট্রেডিং বট ব্যবহার করে। একটি বট 24×7 কাজ করতে পারে এবং আপনার দেয়া নিয়ম এবং কৌশলগুলির উপর ভিত্তি করে ট্রেড করতে পারে। Cryptohopper হল সর্বাধিক প্রস্তাবিত ক্রিপ্টো ট্রেডিং বট৷

সারাবিশ্বে প্রায় ৪০ হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়ীরা এই মুদ্রা ব্যবহার করেন। ব্যক্তিগত ভাবে কত লোক ব্যবহার করছে তা বলা প্রায় অসম্ভব । নাসদাকের’ তথ্য মতে অনলাইন খুচরা বিক্রেতা Overstock.com, মার্কীন গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতষ্ঠান Tesla Motors, টরেন্ট সাইট The Pirate Bat, ব্রিটেনে রিচার্ড্ ব্রায়ানসন পরিচালিত বিমান সেবা প্রতিষ্ঠান Virgin Galactic, আমাদের সবার পরিচিত ব্লগিং প্লাটফর্ম WordPress ছাড়াও অনলাইন অনেক ডেটিং সাইট ₿ গ্রহন করে থাকে। 

বিটকয়েন কোন কোন দেশে বৈধ

Bitcoin একটি নতুন মুদ্রা। ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে বিভিন্ন জল্পনা-কল্পনা ও বিতর্ক চলছে, কিছু দেশ তাদের বৈধ করার জন্য বিল পাস করেছে।

নভেম্বর 2021-এ Library of Congress (LOC), 103টি দেশ খুঁজে পেয়েছে যেগুলির সরকার আর্থিক নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলিকে ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং AML/CFT-তে তাদের ইউটিলিটি সম্পর্কীত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে এ সম্পর্কীত প্রবিধান তৈরি তৈরি করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে৷

বিটকয়েন যেসব দেশে বৈধ

  • যুক্তরাষ্ট্র
  • ইউরোপীয় ইউনিয়ন
  • কানাডা
  • অস্ট্রেলিয়া
  • এল সালভাদর
  • ডেনমার্ক
  • ফ্রান্স
  • জার্মানি
  • আইসল্যান্ড
  • জাপান
  • মেক্সিকো
  • স্পেন
  • যুক্তরাজ্য

বিটকয়েনের ব্যাপক প্রচলন বা জনপ্রিয়তার কারণ

বিটকয়েন এর ব্যাপক প্রচলনের কিছু বিশেষ কারণ নিচে তুলে ধরা হলো । 

  • সহজেই একউন্ট করা যায় ও লেনদেন শুরু করা যায়ঃ সাধারণ ব্যাংক একাউন্ট খোলার জন্য আমাদের নির্দিষ্ট ব্যাংকে যাওয়া এবং বিভিন্ন কাগপ পত্রের প্রয়োজন হয় । সেই তুলনায় এই একাউন্ট খোলার জন্য কোথাও যাওয়া বা কোন কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় না। সাধারন কম্পিউটার জ্ঞান আর অনলাইনে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকলেই খুব সহজে আপনি একাউন্ট খুলতে পারবেন।
  • ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা প্রকাশ হয় নাঃ একজন ব্যবহারকারী একাধিক একাউন্ট বা একাধিক ঠিকানা ধারন করতে পারেন, তাতে তার কোন নির্দিষ্ট বা আসল নাম ঠিকানা কীংবা তৃতীয় ব্যক্তির (Granter) প্রয়োজন হবে না । এই কারণে সিটিজেন থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী এমনকী কালো বাজারের সকল লেনদেন মাধ্যমে করতে সবাই পছন্দ করে ।
  • লেনদেনের স্বচ্ছতা ও সিকিউরিটিঃ অনলাইন ব্লক চেইনের মা্ধ্যমে এর সকল লেনদেন লিপিবদ্ধ করা হয়ে থাকে। এটা একটা বিরাট সংরক্ষনাগার কীন্তু অতি সরল ভাবে এটাকে উপস্থাপন করা হয়ে থাকে । যে কেউ চাইলেই তার লেনদেন দেখতে পারে কীন্তু নিয়ন্ত্রন করতে পারে না । যেই কারণে জালিয়াতি বা প্রতারনার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে । 
  • লেনদেনের স্পিডঃ বিটকয়েনের মাধ্যমে লেনদেন করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে লেনদেন সম্পন্ন হয়  । এটা খুবই দ্রুত লেনদেন সম্পন্ন করে। যেই কারণে ব্যবসায়ীরা ব্যবসায়ী লেনদেন এই কারণে বিটকয়েনের মাধ্যমে সম্পন্ন করে । মুদ্রার মান ক্রমাগত আবনতির জন্য অর্থনীতিতে অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ।

এই সুবিধার কারনেই অনেক মানুষকে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বাড়ছে ক্রাইম করার প্রবণতা।

তবুও, অভিজ্ঞদের মতে প্রচলিত মুদ্রার উপর চাপ কমাতে ডিজিটাল মুদ্রার ব্যবহার বাড়ানো উচিত। তাই মুদ্রার অবমূল্যায়নের জন্য অনেকেই বিটকয়েনকে প্রতিকার হিসেবে বেছে নিয়েছে। এটি যেহেতু ডিজিটাল প্রথম মুদ্রা, তাই মানুষ এর ব্যবহার বেশি করছে।

বিটকয়েন উপার্জন

বিটকয়েন আয় বা ইনকাম করার উপায়

ইন্টারনেটে এমন অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে আপনি বিজ্ঞাপন দেখা, গেম খেলা ইত্যাদির মতো বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করে বিনামূল্যে বিটকয়েন উপার্জন করতে পারেন। তবে, বর্তমান সময়ে খুব সহজেই বিটকয়েন উপার্জন করা যাচ্ছে না।

BTC পাওয়ার চারটি প্রধান উপায় রয়েছে:

  1. Coinbase বা ক্যাশঅ্যাপের মতো পেমেন্ট সার্ভিসর মতো ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ থেকে ক্রয়,
  2. রবিনহুডের মতো একটি বিনিয়োগ ব্রোকারেজের,
  3. ক্রিপ্টোকারেন্সি এটিএম বা দোকান, এবং
  4. কাজ করার বিনিময়ে ₿ পেতে একটি ক্রিপ্টো কল ব্যবহার ।
  5. ইনভেস্টমেন্ট করে নয়তো
  6. বিটকয়েন মাইনিং করে

আপনি Coinbase এর মতো ওয়েবসাইট থেকে এর সম্পর্কে শিখে উপার্জন করতে পারেন। এই সাইটটি ক্রিপ্টো সম্পর্কে বিভিন্ন কোর্স এবং ভিডিও অফার করে। আপনাকে শুধু কুইজের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে অথবা কিছু নির্দিষ্ট কাজ করতে হবে। এর উপর ভিত্তি করে, আপনাকে একটি নির্দিষ্ট ক্রিপ্টো মুদ্রার একটি ছোট অংশ দিয়ে পুরস্কৃত করা হবে।

ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হল আরবিট্রেজ। এটি আপনাকে একটি নির্দিষ্ট মূল্যে ₿ কেনার সুযোগ প্রদান করে।

ক্রিপ্টোকারেন্সিতে অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে। কোন ইউজার যখন কাউকে তাঁর রেফারেলে জয়েন করার তখন আপনি উভয়েই একটি ছাড় পায়।

বাংলাদেশে বিটকয়েন আয়, লেনদেন

ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনের অনুমতি নেই বাংলাদেশে

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষণা ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে পাঠান একটি চিঠি উপরে ভিত্তিকরে বলা যায় - ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলির বা ভার্চুয়াল মুদ্রা দেশের আইন অনুসারে অবৈধ।

২০১৬ সালের একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক 2016 সালের ডিসেম্বরে তাদের ওয়েবসাইটে একটি সতর্কতা জারি করে জনগণকে কৃত্রিম মুদ্রায় লেনদেন থেকে বিরত থাকতে বলে। "ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেন মানি লন্ডারিং বিরোধী এবং সন্ত্রাসে অর্থায়ন বিরোধী আইন লঙ্ঘন করতে পারে," ।

2017 সালের 24 ডিসেম্বর একটি কেসার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক সকল, ভার্চুয়াল মুদ্রার লেনদেন থেকে বিরত থাকতে বলেছিল।বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে যে "ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্ট 1947, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন 2012 এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইন, 2009 অনুযায়ী কোনও ভার্চুয়াল মুদ্রার মাধ্যমে লেনদেনের অনুমতি দেওয়া হবে না।"

যদিও, ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রাথমিকভাবে আরও অনেক দেশ অনুমোদন দেয়নি। তবে জাপান, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মার্কীন যুক্তরাষ্ট্রের মতো কিছু দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাম্প্রতিক সময়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের স্বীকৃতি দিয়েছে।

বর্তমানে, বাংলাদেশ ব্যাংক এখনো ক্রিপ্টোকারেন্সিকে আইনি মুদ্রা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি, তবে ডিজিটাল মুদ্রার মালিকানা বা লেনদেন অপরাধ নয় বলে স্পষ্ট করে দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি।"আমরা ক্রিপ্টোকারেন্সিকে আইনি মুদ্রা হিসেবে স্বীকৃতি দিই না,"।

রিসোর্সঃ

বিটকয়েন কেন এত জনপ্রিয়?

বিটকয়েন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে ব্যবহারকারীদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রদান করে। বছরের পর বছর ধরে, বিটকয়েন হাজার হাজার নতুন ধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সিকে অনুপ্রাণিত করেছে যা তার প্রযুক্তির উপর তৈরি হয়েছে। অনেক সাইট ক্রিপ্টো গ্রহণ করা শুরু করেছে, যা ফরম্যাটের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। করনা মহামারীর সময় এলন মাস্ক, গোয়েনিথ প্যালট্রো এবং বিল গেটসের মতো সেলিব্রিটিরা এই সিস্টেমটিকে সমর্থন করতে শুরু করেছিলেন, যার ফলে এর জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পায়।

বিটকয়েন কী আসল টাকা?

বিটকয়েন হল একটি বিকেন্দ্রীকৃত ডিজিটাল মুদ্রা যা আপনি ব্যাংকের মতো মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই সরাসরি কীনতে, বিক্রি করতে এবং বিনিময় করতে পারেন।

বিটকয়েন কী বাংলাদেশে বৈধ?

না। অন্যান্য কয়েকটি দেশের মতো বাংলাদেশেও বিটকয়েন এবং অন্যান্য ক্রিপ্টো-কারেন্সির ব্যবহার সুস্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করেছে।

আমি কী বিটকয়েনকে নগদ টাকায় রূপান্তর করতে পারি?

আপনি বিটকয়েনকে নগদে রূপান্তর করতে Coinbase, Binance, Gemini বা Kraken এর মতো একটি ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ ব্যবহার করতে পারেন।একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বিটকয়েন স্থানান্তর করা কারেন্সি বিনিময় করার মতো। কীন্তু বিটকয়েন সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকায় বিনিময় প্রক্রিয়াটি ব্যক্তিগতভাবে ঘটে। এটি বিশ্ব অর্থনৈতিক কাঠামোর দ্বারা মধ্যস্থতা করে না।

বিটকয়েনের কী ভবিষ্যৎ আছে?

বিটকয়েনের ভবিষ্যত এখনও খুব অনিশ্চিত, কীন্তু এটি মূলধারার গ্রহণযোগ্যতার চূড়ায়।প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর আগ্রহ ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ব্যাপক আগ্রহের কারণ হচ্ছে, কীন্তু হেফাজত, নিরাপত্তা এবং মূলধনের দক্ষতার সমস্যাগুলি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তবুও অনেকের মতে বিটকয়েন মূলধারার একটি মুদ্রায় পরিণত হবে।

আরও পড়ুন

August 18, 2023
উপবৃত্তির জন্য আবেদন পত্র লেখার নিয়ম
গণপ্রজাতন্তী বাংলাদেশ সরকার স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান করে থাকেন, যারা আর্থিক…
July 7, 2023
পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
বিদেশে যেতে বা দেশের মধ্যে কোথাও প্লেনে চলাচল করার জন্য পাসপোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই…
May 22, 2023
বাংলাদেশের সকল থানার ওসির নাম ও নাম্বার [Updated 2023]
এখনে বাংলাদেশের সকল বিভাগ ও জেলার সকল থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত ওসির সরকারী মোবাইল নাম্বার এর লিস্ট…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram
Share via
Copy link