Bangla courses
June 1, 2024

কম্পিউটার টেবিল ব্যবহারের উপকারিতা

ডেস্কটপ কম্পিউটারের সিপিইউ কেস ও মনিটর রাখার জন্য টেবিলের প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে কেউ বাসার সাধারণ টেবিল ব্যবহার করে, কেউ বিশেষভাবে বানানো কম্পিউটার টেবিল ব্যবহার করে। অনেকে বাসায় সাধারণ টেবিল থাকার কারণে আলাদা করে কম্পিউটার টেবিল কিনতে চায়না। অথচ কম্পিউটার টেবিলের বিশেষ কিছু সুবিধা আছে যা সাধারণ টেবিলে পাওয়া যায় না। তাই আজকের পোস্টে কম্পিউটার টেবিলে কি কি উপকারিতা পাবেন সেসব বিস্তারিত বলা হবে।

কম্পিউটার টেবিল ব্যবহারের উপকারিতা কি কি?

সঠিক ও নিরাপদভাবে কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশ রাখার জন্য কম্পিউটার টেবিল ডিজাইন করা হয়। কম্পিউটার টেবিলে সিপিউ, মনিটর, কীবোর্ড, মাউস, স্পিকার ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র রাখার জন্য আলাদা কম্পার্টমেন্ট থাকে। এতে সবকিছু সহজে এক্সেস করা যায় এবং সাধারণ টেবিলের চেয়ে কম ধুলো-ময়লা জমা হয়। এছাড়া কম্পিউটার টেবিলের মাধ্যমে খুব সহজে অগোছালো বৈদ্যুতিক তার গুছিয়ে রাখা যায়।

১. বিভিন্ন এক্সেসরিজ রাখার জন্য আলাদা কম্পার্টমেন্ট পাওয়া

কম্পিউটার টেবিলে সবকিছু রাখার জন্য আলাদা জায়গা থাকে। টেবিলের নিচে সিপিউই রাখা যায় বলে উপরের পুরো টেবিল ফাঁকা থাকে। টেবিলের উপরে মনিটরের পাশাপাশি নিজের বই, খাতা, কলম, ঘড়ি ইত্যাদি রাখার পর্যাপ্ত জায়গা থাকে। কীবোর্ড ও মাউস রাখার জন্য এক প্রকার ড্রয়ার থাকে যা বাইরে থেকে দেখা যায়না। টেবিলের নিচের পৃষ্ঠে যাবতীয় তার পেঁচিয়ে রাখার ব্যবস্থা করা হয়, তাই টেবিল খুব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন মনে হয়। 

২. মনিটর থেকে সঠিক দূরত্বে বসতে পারা

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুবিধার একটি হলো কম্পিউটার টেবিলে মনিটর থেকে সঠিক দূরত্বে বসা যায়। কম্পিউটার টেবিলগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয় যে টেবিলের উচ্চতা চোখের সমান্তরাল থাকে। তাই খুব বেশি মাথা বা ঘাড় ঘুরিয়ে মনিটর দেখার প্রয়োজন হয় না। এতে দীর্ঘসময় ধরে কম্পিউটারে কাজ করলেও ঘাড়ে ব্যাথা সৃষ্টি হবে না। এছাড়া চেয়ারের দূরত্ব সঠিক থাকার কারণে চোখের সমস্যা কম হয়।

৩. জিনিসপত্র রাখার জন্য ড্রয়ার ও কেবিনেট পাওয়া

কম্পিউটার টেবিলে একাধিক ড্রয়ার, শেলফ ও কেবিনেট থাকতে পারে। তাই নিজের দরকারি সবকিছু জায়গামত রাখা যায়। টেবিলের ড্রয়ার লক করে রাখার ব্যবস্থা থাকে, তাই যেকোনো দামী জিনিস সবার চোখের আড়ালে নিরাপদে রাখা যায়। কিছু কম্পিউটার টেবিলে বই রাখার শেলফ থাকায় পড়াশোনার কাজে বেশ সহায়ক হয়।

৪. সহজে সরানোর জন্য চাকার ব্যবস্থা থাকা

আগে কম্পিউটার টেবিল স্টেশনারি রাখার মত ডিজাইন করা হতো। কিন্তু এখনকার টেবিলগুলোর নিচে চাকা লাগানো থাকে। তাই সহজে রুমের বিভিন্ন প্রান্তে নেওয়া যায়। অনেকে এক রুম থেকে আরেক রুমে জিনিস আনা নেওয়ার কাজেও টেবিলগুলো ব্যবহার করে। 

৫. পা রাখার বেশি জায়গা পাওয়া

সাধারণ টেবিলের নিচে সিপিইউ রাখার পর পা রাখতে সমস্যা হয়। দীর্ঘদিন এভাবে ব্যবহার করে একসময় নানারকম শারীরিক সমস্যার তৈরি হবে। কিন্তু কম্পিউটিার টেবিলে পা রাখার জন্য নির্ধারিত জায়গা থাকে। তাই আরামে বসে কাজ করা যায়। কিছু টেবিলে পায়ের নিচে নরম জিনিস রাখার জন্য অতিরিক্ত জায়গা দেওয়া হয়। 

৬. রুমের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা

আপনি রুম সাজিয়ে রাখতে পছন্দ করলে কম্পিউটার টেবিল আপনার জন্য ভালো চয়েস। এই টেবিলগুলো আধুনিক ডিজাইনের হয়ে থাকে, তাই দেখতে খুব সুন্দর ও মডার্ন মনে হয়। চাইলে রুমের অন্য ফার্নিচারের সাথে মিল করে কোনো ডিজাইন নিতে পারেন। এতে রুমের সবকিছু এক সেট মনে হবে। যারা গেমিং বা মিউজিক স্ট্রিমিং করে, তারা ওয়াইড ক্যামেরাতে নিজের কম্পিউটার ডেস্ক দেখাতে পারে।

৭. অফিসের প্রয়োজনীয় কাজে সময় বাঁচানো

অফিসে ছোটখাট কাজে বারবার ওঠাবসা করে সময় নষ্ট হতে পারে। এক্ষেত্রে কম্পিউটার টেবিলে সব জিনিস ও কাগজপত্র এক স্থানে রাখতে পারবেন। এতে যেকোনো তথ্য উপাত্ত সহজে ফাইলের পেপার থেকে কম্পিউটারে স্প্রিডশীটে উঠানো যায়। আবার কম্পিউটার টেবিলে চায়ের কাপ, পানির বোতল, টেবিল টপ ক্যালেন্ডার, ঘড়ি, ফুলের টব ইত্যাদি রাখার নির্দিষ্ট জায়গা থাকে।

৮. রিয়েল স্টেট ও রিসেল ভ্যালু বাড়ানো

বিদেশের মত বাংলাদেশেও ফার্নিচারসহ বাসা ভাড়া দেওয়া বা বিক্রি করা বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। বাসায় কম্পিউটার টেবিল থাকলে অন্য কেউ সহজে বাসা পছন্দ করবে, কারণ তার আর আলাদা সময় নষ্ট করে টেবিল কিনতে হবে না। আবার আপনি চাইলে ব্যবহৃত কম্পিউটার টেবিলও বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে বিক্রি করতে পারবেন। কম্পিউটার টেবিল পরিষ্কার রাখা সহজ বলে ভাল দামে দ্বিতীয়বার বিক্রি করা যায়।

৯. ওজন কমানো ও দাঁড়িয়ে কাজ করার ব্যবস্থা থাকা

কম্পিউটারে সারাদিন বসে কাজ করার ফলে শরীর খারাপ হতে পারে। অনেকসময় মেরুদন্ডে মারাত্মক চাপ তৈরি হয়। তাই অ্যাডজাস্ট করা যায় এরকম চেয়ার ও টেবিল কিনতে সবাই পছন্দ করে। রিভলভিং কম্পিউটার টেবিলগুলো নিজের সুবিধামত ভাজ করে নেওয়া যায়। এছাড়া কিছু স্ট্যান্ডিং টেবিল আছে, যার উচ্চতা কমবেশি করে দাড়িয়েও কাজ করা যায়।

কি কি দেখে ভাল কম্পিউটার টেবিল কিনতে হয়?

  • কম্পিউটার টেবিল কেনার সময় ব্রান্ড বেশ বড় ভূমিকা রাখে। রেপুটেড কোম্পানি সবসময় উন্নতমানের বীচ কাঠ ও আর্টিফিশিয়াল ইঞ্জিনিয়ারড কাঠ ব্যবহার করে। তাই ব্রান্ডেড টেবিলের ডিজাইন ও ডিউরেলিবিটি বেশি হবে।
  • ৬ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে বিভিন্ন মানের প্রিমিয়াম কম্পিউটার টেবিল পাওয়া যায়। এসব টেবিলে অনেক ফাংশনালিটি থাকে। এগুলো দেখে কিনতে হবে।
  • আপনার কম্পিউটারের সাইজ ও নিজের চাহিদা দেখে সেই আকারের কম্পিউটার টেবিল কিনতে হবে। শুধু ল্যাপটপ চালানোর জন্য আলাদা রকমের ছোট কম্পিউটার টেবিল আছে।

সবশেষ কথা হলো কোথায় ভাল কম্পিউটার টেবিল পাবে? আপনার কাছাকাছি থাকা ব্রান্ডেড ফার্নিচার শপগুলোতে সবরকম কম্পিউটার টেবিল পাবেন। এছাড়া গুগলে “computer price in bangladesh” লিখে সার্চ করলে কাছাকাছি সেরা টেবিল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এর ওয়েবসাইট ও স্টোরের লোকেশন পেয়ে যাবেন। অনলাইনে কিনলে অবশ্যই ওয়ারেন্টি পলিসি, ডেলিভারি মেথড ও টেবিলের গুণগত মান যাচাই করে কিনবেন। তাহলে বারবার কম্পিউটার টেবিল কেনার মত সমস্যা তৈরি হবে না।

আরও পড়ুন

June 6, 2024
অর্থোপেডিক ডাক্তার কে? অর্থোপেডিক ডাক্তার কী করেন?
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শরীরের প্রতিটি অংশের সুস্থতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে হাড় ও জয়েন্ট। যখন…
August 18, 2023
উপবৃত্তির জন্য আবেদন পত্র লেখার নিয়ম
গণপ্রজাতন্তী বাংলাদেশ সরকার স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদান করে থাকেন, যারা আর্থিক…
July 7, 2023
পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে
বিদেশে যেতে বা দেশের মধ্যে কোথাও প্লেনে চলাচল করার জন্য পাসপোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram
Share via
Copy link