আপনি যদি একটি গ্রামে বা ছোট শহরে বসবাস করেন এবং আপনার নিজের ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে আমাদের কাছে আপনার জন্য কিছু ভালো ধারণা আছে। এই ব্যবসায় কম বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় এবং বিনিময়ে ভাল লাভ হয়।
বাংলাদেশের 70% জনসংখ্যা ছোট শহর এবং গ্রামে বসবাস করে। এই এলাকায় নতুন ব্যবসার সুযোগ অনেক আছে. বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে আয়ের প্রধান উৎস কৃষি। এসব এলাকায় বিদ্যমান লাভজনক ব্যবসার অধিকাংশই কৃষি সংশ্লিষ্ট। তবে বাংলাদেশে গ্রামীণ এলাকায় ব্যবসার বিশাল সুযোগ রয়েছে।
গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী লোকেরা শুরু করতে পারে এমন অনেক ব্যবসার সুযোগ রয়েছে। গ্রামে কোনো ব্যবসা শুরু করতে আপনার খুব বেশি বিনিয়োগ বা বিস্তারিত কাগজপত্রের প্রয়োজন নেই। এবং সবচেয়ে ভাল জিনিস হল এই ছোট ব্যবসাগুলি আপনাকে খুব ভাল আয় হয়। সুতরাং, আসুন কিছু লাভজনক ব্যবসার ধারণাগুলি সম্পর্কে জানি।
একটি ব্যবসা শুরু করা নিজেই একটি অত্যন্ত কঠিন কাজ, এবং তারপরে সেই ব্যবসাটিকে টেকসই এবং লাভজনক করে তোলার জন্য অনেক প্রচেষ্টা এবং সময় লাগে। এটি প্রায় একটি শিশুকে পূর্ণ বয়স্ক ব্যক্তিতে লালন-পালনের মতো। যেন এটি যথেষ্ট কঠিন ছিল না, বাংলাদেশের মতো একটি দেশে, যেখানে জনসংখ্যার একটি বড় শতাংশ গ্রামে বাস করে, শহরগুলির তুলনায় খুব আলাদা অবকাঠামো সহ, এটি অতিক্রম করা একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ।
প্রতিটি একক ব্যবসার নিজস্ব পরিকাঠামো প্রয়োজনীয়তা এবং নিজস্ব চাহিদার সেট রয়েছে। এগুলির অনেকগুলি শারীরিক অবস্থানের উপরও নির্ভর করবে যেখানে একজন ব্যক্তি ব্যবসা সেট আপ করেছেন। ফলস্বরূপ, বাংলাদেশের মতো একটি দেশের গ্রামে স্টার্ট-আপ গড়ে তোলার চেষ্টার নিজস্ব চ্যালেঞ্জ থাকবে।
এছাড়াও, প্রতিটি ব্যবসায় নিজেকে স্থল থেকে শুরু করার জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে এবং তাই আপনাকে গ্রামগুলিতে আপনাকে প্রভাবিত করবে এমন কারণগুলি মনে রাখতে হবে যাতে আপনি সেই অনন্যগুলি মোকাবেলা করার জন্য ব্যয় করা খরচগুলি কভার করার জন্য যথেষ্ট বিনিয়োগ অর্জন করতে পারেন।
যাইহোক, বাংলাদেশের গ্রাম একটি ব্যবসা শুরু করার জন্য লাভজনক অবস্থান হতে পারে। গ্রামীণ এলাকায় ব্যবসা শুরু করার ক্ষেত্রে কম কঠোর প্রবিধান এবং কাগজপত্র জড়িত থাকার একটি প্রধান কারণ।
তারা বেশ কয়েকটি আকর্ষণীয় ব্যবসায়িক সুযোগও উপস্থাপন করে, যেমন গ্রামীণ বাংলাদেশের বেশিরভাগ কৃষি খাত সম্প্রসারণের জন্য দায়ী এবং এর ফলে জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য দায়ী। তাই স্টার্ট-আপদের গ্রামে পুঁজি করার জন্য যথেষ্ট ব্যবসার সুযোগ থাকতে পারে, যা তারা তুলনামূলকভাবে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং উন্নতি করতে পারে।
সরকারি সংস্থার সক্রিয় সহায়তায় মুরগি পালনের ব্যবসা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তদুপরি, এটি মূলধন নিবিড় নয় এবং এর জন্য খুব বেশি জমির প্রয়োজন হয় না। যাইহোক, একজন ব্যক্তির ব্যবসা চালানোর জন্য কিছু অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে পোল্ট্রি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে যা বিনিয়োগের আয় কমাতে সাহায্য করে। প্রাথমিকভাবে, আপনি সীমিত সংখ্যক পাখি দিয়ে শুরু করতে পারেন এবং পাখির গুণমান এবং বৈচিত্র্যের সাথে সাথে সময়ের সাথে সাথে ব্যবসা বাড়াতে পারেন। স্থানীয় চাহিদার পাশাপাশি, আপনি শহরগুলিতে মাংস/ডিমের বিজ্ঞাপন এবং বিক্রি করতে পারেন।
জৈব ফল ও সবজির বাজার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং গ্রামের কাছাকাছি বসবাস করছে এবং ছোট শহরে উৎপাদিত পণ্যের বৃদ্ধি ও বিপণন শুরু করার জন্য একটি ভাল ব্যবসার সুযোগ রয়েছে। যাইহোক, একটি ব্যবসা শুরু করা সহজ নয় এবং ফসল বাড়ানোর জন্য কৃষিজমি বা কৃষকদের সাথে একটি চুক্তির প্রয়োজন। তদুপরি, এগুলি পচনশীল পণ্য এবং স্টোরেজের জন্য হিমাগার প্রয়োজন। কম পরিবহন এবং লজিস্টিক চার্জের জন্য বিক্রেতাদের কাছাকাছি ব্যবসা শুরু করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
কাচাঁমাল তথা তাজা শাকসবজি সকলের নিকট প্রিয়।গ্রাম হোক বা শহরের লোক সবার কাছে তাজা শাকসবজি পছন্দের তালিকায় রয়েছে। সুতরাং এর চািহিদা কখনো বাড়বে বৈ কমবে না। সুতরাং গ্রামে এটির ব্যবসায় একটি লাভজনক ক্ষেত্র।কারণ এর উৎপাদন গ্রামেই হয়।তাই গ্রামে এর পরিবহন খরচ নেই বললেই চলে।তাই গ্রামে এটি একটি লাভজনক ব্যবসায়।
কাঁচামাল বলতে আমরা সাধারণত শাকসবজিকে বুঝে থাকী। সবজির থির অন্যতম হলো লাউ, কুমড়া, ঢেড়স, আলু ইত্যাদি এবং শাকের ভিতর অন্যতম হলো লাল শাক, লাউ শাক, কুমড়ো শাক ইত্যাদি। এগুলো সাধারণত কাঁচামাল হিসেবই গণ্য করা হয়।
আপনি চাইলেই কাঁচামাল স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতে পারেন আবার চাইলেই নিজে খুচরা হিসেবে বিক্রি করতে পারেন। এ ব্যবসায়ে আপনি ৫০০০ টাকা থেকে ১০০০০ টাকা দিয়ে শুরু করতে পারেন।
গ্রামে হোক আর শহরে হোক এই ব্যবসায়ের চাহিদা সবখানেই আছে। কারণ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের চাহিদা সবসময় আছে থাকবেই। আর এই মুদি দোকানে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য পাওয়া যায়। আপনি চাইলেই এখানে অল্প পুঁজিতে ব্যবসায় শুরু করতে পারেন।আপনি যদি কৌশল খাটিয়ে এ ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারেন তাহলে আপনি অবশ্যই সফল হবেন।
এছাড়াও আপনাকে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে আপনি যেনো কাস্টমারকে বেশি বাকী না দেন।বাকী দেওয়ার জন্য আপনাকে একটু সচেতন হতে হবে।নাহলে বাকী দিতে দিতে আপনার পুঁজি শেষ হয়ে যাবেন। ফলে আপনার ব্যবসায় বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
আপনি মুদি দোকানের পাশাপাশি ফ্লাক্সি লোড বা বিকাশের ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এতে আপনার ব্যবসায় দ্বিগুণ বেড়ে যাবে।
হাসের ফার্মের পাশাপাশি মাছের চাষ খুবই লাভজনক।এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এই ব্যবসায়ের মাধ্যমে আপনি হাস পাশাপাশি মাছের চাষ করবেন। এই আইডিয়ার মাধ্যমে আপনি যে পুকুরে মাছের চাষ করবেন সেই পুকুরের ওপর মাচা তৈরি করে হাস পালন করবেন। এর ফলে মাছকে আলাদা খাদ্য দিতে হবে না। হাস বিষ্ঠা মাছের খাবার হয়ে যাবে।
এই আইডিয়ার ফলে আপনার খরচ অনেক কমে যাবে।আর আপনিও অনেক লাভবান হবেন।এই আইডিয়াতে আপনার পুঁজিও কম লাগবে আর আপনিও লাভবান হবেন। তাই আজই এ ব্যবসায় শুরু করতে পারেন।
গ্রামে ব্যবসায়ের আইডিয়ার মধ্যে অন্যতম হলো চা পানের দোকান।এই ব্যবসায়টি সত্যিই একটি লাভজনক ব্যবসায়।কারণ গ্রামে সবাই সারাদিনের কাজের শেষে চায়ের দোকানে বসে গল্প করে। তারা সারা দিনের কর্মব্যস্ততার পরে সবাই এক সাথে আড্ডা দিতে পছন্দ করে।
আর এজন্য চা পানের দোকানের চাইতে ভালো কোনো জায়গা হতেই পারে না। তাছাড়া এ ব্যবসায়ে বেশি পুঁজি লাগে না।খুব সামান্য পুঁজি নিয়ে এ ব্যবসায় পরিচালনা করা যায়।আর লাভের পরিমাণও অনেক। তাই গ্রামে ব্যবসায় করতে চাইলে এটি হতে পারে আপনার জন্য অন্যতম সেরা একটি ব্যবসায়।
কৃষিকাজের মতো গরু মহিষ পালন করাও একটি সফল ব্যবসায়।আপনি চাইলে বাড়িতে বসেই এই ব্যবসায় করতে পারবেন। আমরা জানি বাংলাদেশের বেশিরভাগ গ্রামের বাড়িতে গরু পালন করা হয়। আমাদের দেশে দুধের চাহিদা অনেক। যে পরিমাণে চাহিদা আছে সেই পরিমাণে দুধ উৎপাদন হচ্ছে না। তাই গ্রামে এটি হতে পারে আপনার জন্য একটি সফল ব্যবসায়ের আইডিয়া।
এছাড়াও আপনি খামারিদের কাছ থেকে দুধ কীনে সেটি বিক্রি করতে পারেন বা আপনি একটি দুধের ব্যবসায় খুলতে পারেন। আপনি এই ব্যবসায়ের মাধ্যমে অনেক লাভবান হতে পারেন।
বর্তমানের ডিজিটাল যুগে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না এমন লোক খুঁজে পাওযা যাবে না। শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বয়স্ক ব্যক্তিরা মোবাইল ফোন ব্যবঞার করে থাকে। তাই মোবাইল ফোন মেরামতের দোকানের চাহিদা অনেক। বর্তমানে শহরের পাশাপাশি গ্রামেও মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই গ্রামে মোবাইল ফোন মেরামতের ব্যবসায় সত্যিই যুগোপযুগী এবং লাভজনক।
এই ব্যবসায়ে খুব সামান্য পুঁজির দরকার পড়ে। এই ব্যবসায়ে যেহেতু কোনো পচনশীল পণ্যের বেচাকেনা নেই তাই এই ব্যবসায়ে তেমন কোনো ক্ষতির আশংকা নেই। তাই আপনি নিশ্চিন্তে এই ব্যবসায়টি শুরু করতে পারেন।
গ্রামে সব থেকে সহজ ব্যবসায়ের মধ্যে অন্যতম হলো ডাব নারকেল সুপারির ব্যবসায়। এই ব্যবসায়ে খুব বেশি পুঁজির প্রয়োজন হয় না। আপনি খামারিদের কাছ থেকে এই গুলো কীনে বড় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করবেন। মানে আপনি মধ্যস্থাকারী হিসেবে ব্যবসায় পরিচালনা করবেন।
গ্রামের চাষীদের কাছ থেকে এই কাচাঁমাল ক্রয় করে শহরে বা গ্রামে বড় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতে পারেন।এই ব্যবসায়ে আপনার লাভের পরিমাণ অনেক বেশি। এখানে আপনার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা তেমন নেই বললেই চলে। তাই আপনি নিশ্চন্তে এই ব্যবসায়টি শুরু করতে পারেন।
গ্রামে ব্যবসায়ের ভিতর এটি হতে পারে অন্যতম লাভজনক একটি ব্যবসায় আইডিয়া।আমরা মানুষ সামাজিক জীব। আমাদের সমাজে বসবাস করতে হয়। সমাজে বসবাস করতে হলে আপনাকে পরিপাটি হয়ে থাকতে হয়। তাই আমাদের নিয়মিত চুল ছাটানোরে প্রয়োজন পড়ে।
আর এজন্য যারা গ্রামে বসবাস করে তাদের পক্ষে নিয়মিত শহরে এসে চুল ছাটানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই গ্রামে সেলুন ব্যবসায়টি গ্রামে অন্যতম একটি লাভজনক ব্যবসায়।কোনো কাজই ছোটো নয়। তাই আপনি গ্রামে একটি সেলুনের ব্যবসায় খুলতে পারেন।
এই ব্যবসায়ে কোনো ক্ষতি নেই তাই আপনি নির্দ্বিধায় সেলুনের ব্যবসায় শুরু করতে পারেন। খুব সামান্য পুঁজি বিনিয়োগ করে আপনি অনেক লাভবান হবেন। আর এই ব্যবসায়ের চাহিদা কখনো কমবে না বরং যতো দিন যাবে ততই বাড়বে। তাই এটা হতে পারে গ্রামে ব্যবসায়ের আইডিয়ার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায় আইডিয়া।
গ্রামীণ এলাকায় ছোট ব্যবসা কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সাহায্য করতে পারে এবং সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। গ্রামীণ এলাকায় একাধিক ছোট ব্যবসা স্থানীয় আয় এবং ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে স্থানীয় জীবনযাত্রার মানকে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন করতে পারে।
এটি গ্রামীণ এবং ছোট-শহর দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে সাহায্য করে। এটি শহরের অভিবাসীদের চাকরির সন্ধানে শহরে যেতে সাহায্য করে; যদি স্থানীয় এলাকায় চাকরি পাওয়া যায়, তাহলে তাদের বাড়ি থেকে দূরে থাকতে হবে না। গ্রামীণ এলাকায় ছোট ব্যবসা শুরু করা সহজ কারণ সেখানে কম কাগজপত্র, নিয়ন্ত্রক নিয়ম বা অন্যান্য রাস্তার প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।
যদিও বাংলাদেশ জুড়ে গ্রামীণ এলাকায় বসবাসের খরচ সাধারণত বড় শহরগুলির তুলনায় সস্তা, বিশেষ করে ভাড়া এবং সম্পত্তির দামের ক্ষেত্রে, তারপরও আপনাকে বাজেট করতে হবে এবং প্রথমবার শুরু করার সময় সাবধানে খরচ করতে হবে। আপনি যদি একটি নতুন এন্টারপ্রাইজ শুরু করার স্বপ্ন দেখেন এবং এখনও উপার্জন করছেন, তাহলে সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত হওয়ার আগে খণ্ডকালীন কাজ চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে পরীক্ষা করা বুদ্ধিমানের কাজ।
বাংলাদেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ গ্রামে বাস করে। আর গ্রামে বসে ব্যবসায় করার উদ্যোগটি একটি সমযোপযোগী সিদ্ধান্ত। আপনি যদি গ্রামে ব্যবসায় করার কথা চিন্তা করে থাকেন তাহলে উপরের ব্যবসায়ের আইডিয়ার মধ্য থেকে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে পারেন।
আশাকরি লেখাটি পড়ে আপনি গ্রামে ব্যবসায়ের আইডিয়া সম্পর্কে একটি ধারণা পেছেন। উপরের ব্যবসায়ের আইডিয়া থেকে যেকোনো একটি ব্যবসায় বেছে নিলে আপনি লাভবান হবেন। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি আপনাকে সঠিক তথ্য প্রদান করতে।