ঘোরাঘুরি করতে কে না ভালোবাসে? কর্মব্যাস্ত জীবনের ক্লান্তি দূর করতে ভ্রমনের বিকল্প নেই।কিন্তু কর্মব্যস্ত জীবনে দূরে কোথাও যাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই অনেকের পছন্দ ঢাকার আশেপাশে এমন একটি জায়গা যেখানে আপনি একদিনের ভিতর গিয়ে ফিরে আসতে পারবেন।
ঢাকা সিটিতে ঘোরায় জায়গা খুব একটা নেই বললে চলে, চিড়িয়াখানা, চন্দ্রিমা উদ্ধান, হাতিরঝিল ঘুরে যারা ক্লান্ত তাদের জন্য আমি বর্তমান সময়ে ১ দিন ঢাকার আশেপাশে ঘুরে আসার মতো স্থানগুলো নিয়ে আর্টিকেল সাজিয়েছি।
আপনি কি ঢাকার আশেপাশে ঘোরার মতো এমন কোনাে জায়গা খুজঁতেছেন? আজ আমি আপনাদের জানাবো ঢাকার আশেপাশের ঘোরার মতো ১২ টি জায়গা সম্পর্কে।
বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা আউনিয়নে অবস্থিত।এটি প্রায় ৩৬৯০ একর জায়গা ঘিড়ে গড়ে তোলা হয়েছে।এই পার্কের প্রবেশমূল্য জনপ্রতি ৫০ টাকা করে।
পার্কের ৫ টি অংশে ভাগ করা হয়েছেঃ বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, বায়োডাইভার্সিটি পার্ক. সাফারি কিংডম, কোর সাফরি, এক্সটেনসিভ এসিয়ান ডাইভার্সিটি পার্ক।
মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলায় অবস্থিত এই পদ্মা রিসোর্ট।এটি পদ্মার পাড়ে অবস্থিত। ঢাকা থেকে গাড়ি নিয়ে গেলে ২ ঘন্টার মধ্যে পৌছে যাবেন।
রিসোর্টে ভিতরে আছে রেস্টুরেন্ট, খেলাধুলা করার জায়গা,রিভার ক্রুজ। যারা নদী পাড় এবং কাশফুেলের দৃশ্য অবলোকন করতে চান তারা এখানে আসতে পারেন।
মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি অবস্থিত।প্রতি রবিবার এবং সোমবার আধাবেলা ছাড়া প্রতিদিন ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে।এই সময়ে গেট উন্মুক্ত থাকে
গাজিপুর জেলার পুবাইলে অবস্থিত জল জঙ্গলের কাব্য। এটি প্রায় ৯০ বিঘা জায়গার ওপরে অবস্থিত।সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার, রাতের খাবার মিলিয়ে এখানে প্রায় ৩০০০ টাকার মতো খরচ হবে।
নরসিংদী জেলায় অবস্থিত এই ড্রিম হলিডে পার্ক। রাতে থাকার জন্য এখানে সু ব্যবস্থা রয়েছে এবং এখানে প্রবেশের জন্য জনপ্রতি ২০০ টাকা করে নির্ধারণ করা হয়েছে। পরিবার নিয়ে হৈ চৈ করতে চাইলে এবং পিকনিক করতে চাইলে এখানে আসতে পারেন।
যমুনা সেতুর কাছেই অবস্থিত এই যমুনা রিসোর্ট। টাঙ্গাইল এবং সিরাজগঞ্জ জেলার মাঝামাঝি এ রিসোর্ট অবস্থিত।এখানের খরচ জনপ্রতি ৪০০০ টাকা করে।
এখানে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা ছাড়াও রয়েছে সুমিং পুল, জিম এবং খেলাধুলার সু ব্যবস্থা এবং অন্যান্য সুবিধা। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রিসোর্টটি প্যাকেজের সুবিধা দিয়ে থাকে।
নিকলী হাওর কিশোরগঞ্জ জেলায় অবস্থিত।খোলামেলা পরিবেশে প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে চলে আসতে পারেন এই নিকলী হাওরে।ঢাকা থেকে বাসে বা ট্রেনে কিশোরগঞ্জ শহরে আসবেন । সেখান থেকে সিএনজি তে করে নিকলী ঘাট আসবেন।ঘাটে এসে নৌকা ভাড়া করে ঘুরতে পারেন পুরো হাওর।
জিন্দা পার্ক নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জে অবস্থিত।ঢাকা থেকে মাত্র ৩৭ কিলোমিটারের দূরত্ব।কম সময়ে এবং কম খরচে ঘোরার জন্য জিন্দা পার্ক ঘুড়ে আসতে পারেন।
পার্কের ভিতরে রেস্টুরেন্ট আছে এবং রাতে থাকার জন্য রয়েছে গেষ্ট হাউজ।এখানে প্রবেশের টিকেট মূল্য জনপ্রতি ১০০ টাকা।
পূর্বাচর বালু নদীর পাশে নকশী পল্লী অবন্থিত।এটি আসলে কোনো ঘোরার জায়গা নয়। এটি আসলে একটি রেস্তোরা।তবে এটি আপনাকে প্রকৃতির মাঝে খাবার উপভোগ করার দারুণ এক অনুভূতি দেবে।এছাড়া আপনি বোটে করে নদীতে ঘুরতে পারবেন।
ঢাকার অদূরে ২৭ কিলোমিটার নারায়নগঞ্জের কাছে সোনারগাঁতে অবস্থিত পানাম নগর।ঈসা খাঁর আমলে বাংলার রাজধানী ছিলো এই পানাম নগর।এখানে বাংলার বার ভুইয়াঁদের ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত শতাব্দীর পুরনো অনেক ভবন রয়েছে।
টাঙ্গাইলে অবস্থিত মহেরা জমিদার বাড়ি হচ্ছে টাঙ্গাইলে অবস্থিত সবথেকে সুন্দর জায়গা।এখানে তিনটি স্থাপনা আছে।জমিদার বাড়ি ঢাকা থেকে প্রায় ৩-৪ ঘন্টার পথ।
মহেরা জমিদার বাড়ির বর্তমান নাম মহেরা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার।ঢাকা থেকে আপনাকে প্রথম আসতে হবে নাটিয়া পাড়া বাস স্ট্যান্ডে। সেখান থেকে আপনি যেতে পারবেন মহেরা জমিদার বাড়িতে।এখানের টিকেটমূল্য জনপ্রতি ২০ টাকা ।
সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে পূর্বদিকে সাভার পৌরসভার মজিদপুরে অবস্থিত রাজা হরিসচন্দ্রের ঢিবি। খ্রিস্ট্রীয় সপ্তম শতকে এটি বৌদ্ধ ধর্ম সংশ্লিষ্ট একটি কেন্দ্র ছিলো বলে বোঝা যায়।
সোনারগাঁও বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি শহর। এটি 13 তম এবং 14 তম শতাব্দীতে বাংলার রাজধানী ছিল এবং প্রচুর সংখ্যক প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভ এবং ধ্বংসাবশেষ আছে।
নারগাঁও পানাম শহর গ্রামীণ জীবনে পূর্ণ একটি জীবন্ত জাদুঘর, যা বাংলার গ্রামীণ মানুষের অনন্য জীবনধারাকে দেখায়। সোনারগাঁও বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্য একটি অবশ্যই দেখার গন্তব্য।
বালিয়াটি জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের একটি অনন্য স্থাপত্য নিদর্শন। এটি 19 শতকের শেষের দিকে মানিকগঞ্জ জেলার বালিয়াটি গ্রামে স্থানীয় জমিদার মেজর অভয় নারায়ণ চৌধুরী দ্বারা নির্মিত হয়েছিল।
বাড়িটি একটি দোতলা বিল্ডিং যার মাঝখানে একটি বড় খোলা উঠান রয়েছে। এটি জটিল পোড়ামাটির কাজ দ্বারা সজ্জিত, যা এই অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী লোকশিল্প।
বাড়িটি বিভিন্ন ধরনের প্রাচীন আসবাবপত্র, বাসনপত্র এবং বাতি দিয়ে ভরা, যা দর্শকদের অতীতের এক ঝলক প্রদান করে। বাড়িটি এই অঞ্চলের জমিদারি সংস্কৃতির স্থাপত্য এবং জীবনধারার একটি প্রমাণ।
এটি একটি ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে মনোনীত করা হয়েছে এবং দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত।
ঢাকার আশেপাশে যারা ঘুড়ে দেখতে চান, আপনারা উপরোক্ত জায়গাগুলোতে একবার হলেও ঘুরে দেখতে পারেন।জায়গাগুলোতে আপনারা এক দিনের ভিতরে ভ্রমন করে আসতে পারবেন। আপনারা জায়গাগুলো অনেক উপভোগ করবেন সেই সাথে আপনাদের কর্মময় জীবনের ক্লান্তি কিছুটা হলেও দূর হবে ।