কীভাবে বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট পাবেন? বা ই-পাসপোর্টের জন্য কীভাবে আবেদন করবেন কীভাবে? কী কী লাগবে? এই সব প্রশ্নের উত্তর পেতে পড়তে থাকুন।
একটি e-passport বা electronic passport হল একটি পাসপোর্ট যাতে একটি ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর চিপ এবং অ্যান্টেনা থাকে যা ব্যক্তির বায়োমেট্রিক পরিচয় যেমন ছবি, আঙুলের ছাপ এবং চোখের আইরিশ এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ডাটা রাখে করে৷
বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক্স পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) সেবা করা শুরু করেছে ২২ জানুয়ারি ২০২০ সালে। পাসপোর্ট পাওয়ার জন্য কখনই দালালের শরণাপন্ন হবেন না কারণ বর্তমানে ডিজিটাল পাসপোর্টের সাথে দালালদের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই আপনার নিজের পাসপোর্ট নিতে এই গাইডটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
ই-পাসপোর্টের বা Biometric passport এর জন্য আবেদন করতে হলে প্রথমে (www.epassport.gov.bd) ওয়েবসাইটে লগ ইন করুন।ওয়েবসাইটে ডুকে ডিরেক্টরি টু অনলাইন এপ্লিকেশনে ক্লিক করতে হবে।চলুন ধাপে ধাপে জেনে নিই কীভাবে আবেদন করতে হবে।
পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পসপোর্টের কাগজের ফর্ম নিয়ে পূরন করেও পেতে পরেন ই-পাসপোর্ট। আবেদনকারীর ৮৭ ধরনের তথ্য চাওয়া হবে কাগজের ফর্মে। ফর্মে পাসপোর্টের মেয়াদ (৫ বছর অথবা ১০ বছর) ও পাসপোর্টের পাতার সংখ্যা (৪৮ অথবা ৬৪) ইত্যাদি তথ্য জানতে চাওয়া হবে।
তাছাড়া আপনার জরুরী ভিত্তিতে পাসপোর্টের প্রয়োজন হলে আবেদনকারীকে নিজের উদ্যোগে আগেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আনতে হবে।পাসপোর্ট ফর্মে প্রি-পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে এর নম্বর ফর্মে উল্লেখ করতে হবে। আবেদনের সময় জমা দিতে হবে ক্লিয়ারেন্সর কপি।
একজন প্রাপ্ত বয়স্কের জাতীয় পরিচয়পত্র/স্মার্ট কার্ড জমা দিতে হবে ই-পাসপোর্ট করতে ফরম পূরন করতে হলে।আর ১৮ বচরের কম বয়সীদের জন্য জন্মনিবন্ধনের সার্টিফিকেট,বাবা-মায়ের বাবা মায়ের ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি জমা দিতে হবে।
বাংলাদেশে আবেদনকারীর জন্য ৪৮ পৃষ্ঠার ০৫ বছর মেয়াদী সাধারণ ফি ৩৫০০ টাকা, জরুরি ফি ৫৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৭৫০০ টাকা। ১০ বছর মেয়াদি ফি ৫০০০ টাকা, জরুরি ফি ৭০০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৯০০০ টাকা।
৬৪ পৃষ্ঠার ০৫ বছর মেয়াদী সাধারণ ফি ৫৫০০ টাকা, জরুরি ফি ৭৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১০,৫০০ টাকা। ১০ বছর মেয়াদি ফি ৭০০০ টাকা, জরুরি ফি ৯০০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১২,০০০ টাকা।সব ফির সাথে যুক্ত হবে ১৫% ভ্যাট।
উপরের প্রদত্ত দুইটি পক্রিয়ায় অনলাইনে ফর্ম পূরন করে অথবা সরাসরি পাসপোর্ট কার্যালয় থেকে কাগজে ফর্ম পূরন করে আপনি ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
তিন ধরনের ই-পাসপোর্ট বিতরণ ব্যবস্থা রয়েছে। আবেদনকারীরা আবেদন জমা দেওয়ার তারিখ থেকে নির্ধারিত কার্যদিবসের পরে তাদের ই-পাসপোর্ট পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ই-পাসপোর্ট এর খরচ এর টেবিল
ই-পাসপোর্ট টাইপ | নিয়মিত (21 কার্যদিবস ডেলিভারি ) | এক্সপ্রেস (10 কার্যদিবস ডেলিভারি ) | সুপার এক্সপ্রেস (2 কার্যদিবস ডেলিভারি ) |
---|---|---|---|
48-পৃষ্ঠা ও 5-বছরের মেয়াদ | 4,025 টাকা | 6,325 টাকা | 8,625 টাকা |
48-পৃষ্ঠা ও 10-বছরের মেয়াদ | 5,750 টাকা | 8,050 টাকা | 8,625 টাকা |
64-পৃষ্ঠা ও 5-বছরের মেয়াদ | 6,325 টাকা | 8,625 টাকা | 12,075 টাকা |
64-পৃষ্ঠা ও 10-বছরের মেয়াদ | 8,050 টাকা | 10,350 টাকা | 13,800 টাকা |
আবেদনপত্র প্রিন্ট করার পর আপনি আপনার পাসপোর্ট ফি নির্দিষ্ট ব্যাংকে জমা দিন। ব্যাংক ডিপোজিট স্লিপে একই নাম লিখতে মনে রাখবেন যেভাবে আপনি আপনার আবেদনে লিখেছেন।
ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার পরে, ব্যাংক আপনাকে একটি রসিদ স্লিপ দেবে, যার একটি রেফারেন্স নম্বর থাকবে। আপনার আসল আবেদনের পৃষ্ঠা 3-এ দেওয়া জায়গায় সাবধানে এই রেফারেন্স নম্বরটি লিখুন। এবং 3য় পৃষ্ঠার নীচে আপনি স্বাক্ষর এবং তারিখ।
পাসপোর্ট স্লিপ ইস্যু করার পর আপনার ফাইলটি পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য জেলা বিশেষ পুলিশে পাঠানো হবে। তারপর আপনার ফাইল তদন্তের জন্য আপনার সংশ্লিষ্ট স্থানীয় পুলিশ অফিসারের কাছে যাবে। পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য তিনি আপনাকে নিম্নলিখিত তথ্য চাইতে পারেন।
1) আপনার এবং আপনার পিতামাতার জাতীয় পরিচয়পত্র।
(2) পাসপোর্টের আবেদনে প্রদত্ত পেশার প্রমাণ, যেমন ছাত্র হলে স্টুডেন্ট আইডি কার্ড।
(3) বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি বা বিদ্যুৎ বিল কার্ডে রিচার্জ করা থাকলে কার্ডের ফটোকপি।
(4) স্থায়ী স্থান নির্ধারণ।
(5) বাড়ির সীমানার বিবরণ। ইত্যাদি
পাসপোর্ট ইস্যু স্লিপের তারিখ অনুযায়ী আবার পাসপোর্ট অফিসে যান। ওই দিন আঙুলের ছাপ চেক করার পর ই-পাসপোর্ট দেওয়া হবে।
ই-পাসপোর্টকে কীভাবে আলাদা করা যায় তা এখানে: আপনার পাসপোর্টের সামনের কভারের নীচের অংশে একটি চিপ সাইন বা আইকন রয়েছে। নন-ই-পাসপোর্ট: এটি বাদামী, সবুজ, মেশিন-পাঠযোগ্য পাসপোর্ট (মেরুন) বা পুরনো পাসপোর্ট হতে পারে। এটিতে আপনার পাসপোর্টের সামনের কভারে চিপ সাইন বা আইকন নেই।
একটিসফট কপি হল একটি ভৌত নথির ডিজিটাল একটি ভার্সন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি আপনার কম্পিউটারে একটি ট্যাক্স ফর্ম স্ক্যান করেন তবে আপনি এটির একটি সফট কপি তৈরি করবেন৷
সম্পূর্ণ পূরণকৃত আবেদনপত্রটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট করতে হবে। তারপর এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, এনআইডি কার্ডের ফটোকপি এবং ব্যাংক জমার রশিদ সংযুক্ত করতে হবে।
18 বছরের কম বয়সী আবেদনকারীদের অবশ্যই আবেদনকারীর জন্ম সার্টিফিকেটের সাথে পিতামাতার NID কার্ডের একটি ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
সাধারণত, এগুলি হল মূল নথি যা আবেদনকারীদের বায়োমেট্রিক্সের জন্য নির্ধারিত দিনে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হবে। একটি ই-পাসপোর্ট আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নথিগুলি প্রত্যয়ন ছাড়াই পাসপোর্ট অফিসে জমা দেওয়া যেতে পারে।
কিছু ক্ষেত্রে, আবেদনকারীদের কিছু অতিরিক্ত নথির প্রয়োজন হতে পারে যেমন ঠিকানার প্রমাণ, জন্ম সার্টিফিকেট, পুলিশ রিপোর্টের অনুলিপি (যদি পাসপোর্ট হারিয়ে যায়), এনওসি সার্টিফিকেট, অফিস আইডি কার্ড (চাকরিধারীদের জন্য), শেষ পরীক্ষার সার্টিফিকেট (ছাত্রদের জন্য) , ইত্যাদি
যাইহোক, বায়োমেট্রিক স্ক্রীনিং দিনের সময়, আবেদনকারীকে অবশ্যই তার আসল NID কার্ড, আসল আগের পাসপোর্ট (যদি প্রযোজ্য হয়) যাচাইয়ের জন্য নিতে হবে।