পদ্মা সেতু বা পদ্মা বহুমুখী সেতু বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে ঢাকার সাথে সংযুক্তকারী ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সংযোগ সেতু। এই সেতু নিয়ে বাংলার মানুষের আগ্রহের শেষ নেই।
কারন এর রেকর্ডস সমূহ
সেতুটি পদ্মা নদীর উপর বিস্তৃত এবং বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ও নড়াইল থেকে ঢাকা যেতে সময় লাগবে ৬০ থেকে ১২০ মিনিট।
এ কারণে লাখ লাখ মানুষ নতুন স্বপ্নে বিভোর, তাদের মধ্যে রয়েছে অনেক শ্রেণির ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ।
এটি ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুটির নির্মাণ শুরু হয় এবং 2021 সালের মার্চ মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান নদী পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত একটি বহুমুখী সড়ক-রেল সেতু। যা দেশের রাজধানী ঢাকাকে দক্ষিণের জেলাগুলোর সাথে সংযুক্ত করেছে।
পদ্মা সেতুর নির্মাণ সম্পর্কে তথ্য
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে, কারণ এটি রাজধানী ও দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে পরিবহন ব্যবস্থাকে উন্নত করবে। সেতুটি দক্ষিণ-পশ্চিম এবং দেশের বাকি অংশের মধ্যে একটি সরাসরি সড়ক ও রেল সংযোগ প্রদান করবে, যা ভ্রমণের সময় এবং পরিবহন খরচ কমিয়ে দেবে।
বাংলাদেশে পদ্মা সেতু ২৫ জুন, ২০২২ তারিখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন।
মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়া পয়েন্টে সেতুটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেতুটি উদ্বোধন করতে খরচ হয় ৮৯০ মিলিয়ন টাকা বা ৮৯ কোটি টাকা।
এবং ওই দিনই সেতুটি জনসাধারণের আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য দেশের বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত ছিল পদ্মা সেতুর উদ্বোধন। কারণ এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্প।
দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম সেতুটি দেশের দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনগণের ঢাকার সঙ্গে যাতায়াত সহজ ও সময়সাপেক্ষ করে তুলবে।
সম্পূর্ণ দৃশ্যমান হয়েছে ৬ দশমিক ১৫ কিলমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মা সেতু। সড়ক সেতুর মধ্যে পদ্মা সেতুর অবস্থান ২৫ তম আর সবধরণের সেতুর বিবেচনার ১২২তম অবস্থান।
তবে, এটি দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘতম দোতলা সেতু।
পদ্মা সেতুতে বভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞ ও প্রকৌশলীরা কাজ করেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, অট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ন্যাদারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, জাপান, ডেনমার্ক, ইতালি, মালয়েশিয়া, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, থাইওয়ান, নেপাল ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
একটি ব্রিজ যেখানে ব্রিজ ব্যবহারকারীদের সাথে ব্রিজ ব্যবহার করার জন্য নির্ধারিত টোল ফি প্রদান করতে হয়। পদ্মা সেতুতে টোল ফি নির্ধারিত করা হয়েছে যার সমস্ত বিষয়বস্তু সরকারের নির্দেশনামূলক প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত করা হয়েছে। নিচে পদ্মা সেতু টোল ফি আদায়ের চার্ট দেওয়া হলো।
বাহনের ধরন | পদ্মা সেতুর টোল |
---|---|
মটোর সাইকেল | ১০০ টাকা |
জিপ কার | ৭৫০ টাকা |
পিকাপ | ১২০০ টাকা |
মাইক্রোবাস | ১৩০০ টাকা |
ছোট বাস (৩১ আসনের কম) | ১৪০০ টাকা |
মাঝারি বাস (৩২ আসনের বেশী) | ২০০০ টাকা |
বড় বাস (থ্রী আক্সেল) | ২৪০০ টাকা |
ছোট ট্রাক (৫ টন পর্যন্ত) | ১৬০০ টাকা |
মাঝারি ট্রাক (৫ টন থেকে ৮ টন পর্যন্ত ) | ২১০০ টাকা |
মাঝারি ট্রাক (৮ টন থেকে ১১ টন পর্যন্ত) | ২৮০০ টাকা |
ট্রেইলার (থ্রী এক্সেস পর্যন্ত) | ৫৫০০ টাকা |
ট্রেইলার (ফোর এক্সেল পর্যন্ত) | ৬০০০ টাকা |
ট্রেইলার (ফোর এক্সেলের অধিক) | ৬০০০+ প্রটি এক্সেলে ১৫০০ টাকা |
আপনি যদি চাকরির প্রস্তুতি নিতে চান, তাহলে এই প্রশ্নটির উত্তর জানতে হবে।
পদ্মা সেতু ঢাকার সাথে মোট বাইশটি জেলার সাথে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করেছে।
জেলাগুলো হলো-
এছাড়াও পদ্মা নদীর মাওয়া পয়েন্টে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় অঞ্চল ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী এবং ফরিদপুর জেলা সংযুক্ত হয়েছে।
"কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি"
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - দেশের সবচেয়ে বড় এই সেতুকে সিমেন্ট, বা পাথরের নেহায়েত একটি স্থাপনা হিসেবে দেখছেন না। এটি দক্ষিন অঞ্চলের মানুষের জন্য আশীর্বাদ।
এটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়ার পর থেকে বিভিন্ন্য ভাবে এই প্রকল্পে বাধা আশে। কখনো প্রকৃতি কক্ষন কারো রক্তচক্ষু।
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প।
পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিমি (৩.৮২ মাইল) ও প্রস্থ ১৮.১০ মিটার
দুই প্রান্তে মোট ১৪ কিলোমিটার।
৮১ টি।
৩.৮১ কিলোমিটার।
দুই পাড়ে ১২ কিলোমিটার।
মোট পাইলিং সংখ্যা ২৯৪টি
প্রতিটি পিলারের জন্য ৬টি করে তবে ১২টির জন্য ৭টি করে রয়েছে।
১২০-১২৭ মিটার গভীরে।
৩৮৩ ফুট।
৬০ ফুট
২৬ শে নভেম্বর, ২০১৪
২৫ জুন ২০২২
৪১টি স্প্যান নিয়ে গঠিত, প্রতিটি স্প্যান লম্বায় ১৫০.১২ মিটার (৪৯২.৫ ফুট) এবং চওড়ায় ২২.৫ মিটার (৭৪ ফুট)।
পিলারের সংখ্যা ৪২টি
দূরত্ব ১৫০ মিটার
৪ লেনের সড়ক পথ।
পদ্মা সেতুর নীচের তলায়।
১০০ বছর।
প্রায় ৩০ হাজার দশমিক ৩৯ কোটি টাকা।
চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরিশেষে, পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং নির্মাণ প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত। দুই স্তর বিশিষ্ট ইস্পাত ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এই সেতুর উপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে।
পদ্মা সেতু দৈর্ঘ্যের দিক দিয়ে সুইডেনের অল্যান্ড ব্রিজকে পেছনে ফেলে ১২২তম অবস্থানে এসেছে আমাদের পদ্মা সেতু। এটি প্রামের মানুষদের স্বপ্ন স্থাপনায় অদম্য ভুমিকা পালন করবে, এছাড়াই দেশের অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে সাহায্য করবে।